বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:১৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
অল ব্রডকাস্টার্স কমিউনিটি (এবিসি)’র ফ্যামিলি ডে-২০২৫ অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ ফিল্ম ক্লাব লিঃ’ নির্বাচনের ফল প্রকাশ জনতার নিঃশ্বাস পরিবার আলিফ নয়, আগামীকাল বালাকের সাথে অনন্যার বিয়ে ১৬ই ডিসেম্বর থেকে প্রো অ্যাকটিভ হাসপাতালে চালু হয়েছে প্রো অ্যাকটিভ ক্যান্সার সেন্টার খুলনা সমিতি ঢাকার সভাপতি এম এ সালাম ও সাধারণ সম্পাদক খান রবিউল ইসলাম বিনা প্রতিদ্বন্ধীতায় নির্বাচিত সরকারের আস্থা যাচাইয়ে গণভোট এখন সময়ের দাবি: সাবেক মন্ত্রী এম নাজিম উদ্দিন আল আজাদ টাঙ্গাইলে ‘ভিসতা কৃষক-বিনোদন’ অনুষ্ঠানের চিত্র ধারণ আওয়ামী দুঃশাসনের এক্স-রে রিপোর্ট ‘৮৪০’, বললেন নির্মাতা ফারুকী রণবীর কাপুরের সেলফিতে মেহজাবীন

সীমাহীন দুর্নীতির দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, এখনো বহাল মেয়রপন্থিরা

জ.নি. রিপোর্ট:
  • প্রকাশ সময়ঃ শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৪৯ বার পড়া হয়েছে

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অপসারিত মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বিদায় নিলেও বহাল তবিয়তে আছে তার দুর্নীতিবাজ চক্র। তার সুপারিশে নিয়োগ পাওয়া প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ পছন্দের কর্মকর্তারা অধিষ্ঠিত রয়েছেন নিজ নিজ পদে। সাবেক মেয়রের মদতপুষ্ট চক্রটি নগর পরিষেবার এ প্রধান সংস্থাটি দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করে।

করপোরেশনের বিভিন্ন প্রকল্পে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ, জালিয়াতি, নিয়মবহির্ভূত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান নিয়োগ, দুর্নীতিসহ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। এ চক্রের অন্যতম হোতা হিসেবে কয়েকজন প্রকৌশলী ও পরিকল্পনাবিদের নাম করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মুখে মুখে ঘুরছে। অনেক দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী এখন জার্সি বদলের চেষ্টায় রয়েছেন বলে অভিযোগ।

তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর দুর্নীতি: ডিএসসিসির যান্ত্রিক বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আনিছুর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তাপস আমল থেকেই। কিন্তু সদ্যসাবেক মেয়র তাপসের ছত্রছায়ায় থাকা আনিছুর রহমানের দুর্নীতির অভিযোগগুলো কেউই আমলে নিতে সাহস পাননি। এ তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে জমা পড়া অভিযোগের নথি ঘেঁটে জানা যায়, সাপ্লাই অব জেনসুলিন অ্যান্ড থার্মপ্লাস্টিক পেইন্ট শীর্ষক কাজের মালামাল সংগ্রহ না করেই ২ কোটি ৮৬ লাখ ৮১ হাজার ৮০৬ টাকার ভুয়া বিল পরিশোধ এবং ১ কোটি ৫৫ লাখ ৮২ হাজার ৮০০ টাকার বিল পরিশোধের প্রত্যয়ন করা হয়। এ দুর্নীতির জন্য দায়ী প্রকল্প পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আনিছুর রহমান এবং নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুব আলমের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী দুর্নীতি দমন কমিশনে প্রেরণের বাধ্যবাধকতা থাকলেও তখন তা পাঠানো হয়নি। এ ছাড়া চুক্তির শর্ত পূরণ হয়নি, কিন্তু সাপ্লাই অব পোর্টেবল এয়ার কমপ্রেশার-২ নস, সাপ্লাই অব ব্র্যান্ড নিউ বিটুমিন প্রেসুর ডিস্ট্রিবিউটর শীর্ষক দুটি কাজের বিল জালিয়াতির মাধ্যমে ৫ কোটি ২৪ লাখ ৭৪ হাজার ৫০৩ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। আগের তারিখ দিয়ে বিল পরিশোধ করেন তিনি। এ ছাড়া নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবকে বহিষ্কার করা হলেও তিনি নিয়মিত আনিছুর রহমানের দপ্তরে আসেন এবং কাজ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে মুঠোফোনে একাধিকবার আনিছুর রহমানকে কল দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে খুদে বার্তা পাঠানো হয়। কিন্তু কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।

বোরহান উদ্দিন ও মিথুন শীলের দুর্নীতি, জালিয়াতি: সংস্থার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বোরহান উদ্দিন ও নির্বাহী প্রকৌশলী মিথুন শীলের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতি ও বিল জালিয়াতির অভিযোগ থাকলেও তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে আছেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন শ্যামপুর, দনিয়া, মাতুয়াইল এবং সারুলিয়ার সড়ক অবকাঠামো ও ড্রেনেজব্যবস্থা উন্নয়ন শীর্ষক ৭৬৩ কোটি টাকা প্রকল্পে সীমাহীন দুর্নীতি ও ১৫৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সে পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার বিভাগের নির্দেশক্রমে সংস্থাটির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তাকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু এ দুই প্রকৌশলী বোরহান উদ্দিন ও মিথুন শীলের বিরুদ্ধে বর্জ্য কর্মকর্তাকে চাপ দিয়ে প্রতিবেদন ধামাচাপা দিয়ে রাখার অভিযোগ রয়েছে।

এ ছাড়া সংস্থার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বোরহান উদ্দিনের অধীনে সম্পাদিত নাসিরাবাদ, ডেমরা ও মান্ডার সড়ক অবকাঠামো ও ড্রেনেজব্যবস্থা উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের প্যাকেজ-১৭-এর বিল ও জামানত পরিশোধের জন্য মিথ্যা, প্রতারণামূলক প্রত্যয়ন ও জালিয়াতি ধরা পড়লে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এ তদন্ত প্রতিবেদনও আলোর মুখ দেখেনি। ঠিকাদারের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

নাসিরাবাদ, ডেমরা ও মান্ডার সড়ক অবকাঠামো ও ড্রেনেজব্যবস্থা উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের প্যাকেজ-১৭ ছাড়াও ইমপ্রুভমেন্ট অব ইনার সার্কুলার রিং রোড ফ্রম রায়েরবাজার স্লুইচ গেট টু লোহার ব্রিজ শীর্ষক টেন্ডার প্রক্রিয়ায় জালিয়াতি করে মোট ব্যয় অপরিবর্তিত রেখে প্রধান প্রধান আইটেমের দর বহুগুণ বৃদ্ধি, স্পেসিফিকেশন নিম্নমানে পরিবর্তন করে ইজিপিতে দুবার বিওকিউ পরিবর্তন এবং দরপত্র দাখিলের সময় বৃদ্ধি করে ঠিকাদারের যোগসাজশে ৩০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে বোরহান উদ্দিনের বিরুদ্ধে। তিনি কালো তালিকাভুক্ত ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড (এনডিই) প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ ও চুক্তি করেন বলেও অভিযোগ গেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে। জানতে চাইলে বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘ইনার রিং রোড প্রকল্পে পিপিআর অনুযায়ী যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে-দরপত্র বিধানের নিয়ম অনুযায়ী মূল্যায়ন সম্পূর্ণ হয়েছে। সে মূল্যায়নে প্রধান প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট সবার স্বাক্ষর রয়েছে। এখানে দুর্নীতির কোনো সুযোগ নেই। এ ছাড়া প্রকল্পে কোনো ধরনের অনিয়ম হয়নি। তারপরও একটা সংবাদের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি হয়েছে। কমিটি প্রতিবেদন দিতে দেরি করছে কেন তা আমার জানা নেই।’ কালো তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এনডিইকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে চলতি বছরের ৪ জুলাই। সিটি করপোরেশন এ প্রতিষ্ঠানকে কার্যপত্র দিয়েছে ১ জুলাই। সুতরাং আমরা কালো তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি দিইনি।’

স্থপতি সিরাজুল ইসলামের দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ : ঢাকা দক্ষিণ সিটির মহাপরিকল্পনা (২০২০-২০৫০) তৈরির নামে সাতত্য প্রতিষ্ঠানকে আড়াই কোটি টাকা অবৈধভাবে পরিশোধ করেন স্থপতি সিরাজুল ইসলাম। কেইস প্রকল্পের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যাল স্থাপন ও কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণকক্ষ তৈরির নামে ৩৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। বাস্তবে ট্রাফিক সিগন্যাল স্থাপন করা হয়নি, কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণকক্ষ আনসারদের বেডরুম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। একই সঙ্গে তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। রাশিয়ান ভাষায় ইউক্রেনের একটি ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা পাস করেন। স্বীকৃত কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো ডিগ্রি নেই বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার সিরাজুল ইসলামের দপ্তরে গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি এবং তাঁর মুঠোফোনে কয়েকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি।

দয়া করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই বিভাগের আরো খবর
January 2024
S M T W T F S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
© All rights reserved © 2023 Janatarnissash
Theme Dwonload From