মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩, ১২:৩৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
আসছে সংগীতশিল্পী রুমি খান ও নাসির উদ্দিন সনি’র মিউজিক ভিডিও ‘ভাড়াটিয়া ঘর জামাই’ পরিচালক কাজী হায়াতকে পাল্টা জবাব সোহান-মানিক-খোকনের ‘ভিক্ষা চাইছি, আরিয়ানকে জেলে ভরবেন না’, আকুতি শাহরুখ খানের মারা গেছেন ‘আরআরআর’ খ্যাত অভিনেতা রে স্টিভেনসন চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতিকে বাচসাসের আল্টিমেটাম ‘তোর বুকের পাটা কত বড় দেইখা দিতাম’, আবু সাঈদ চাঁদের উদ্দেশে ডা. মুরাদ সিরিয়াল কিলার ও আন্ডার ওয়ার্ল্ডের কাহিনি নিয়ে আসছে নাটক সুইটি মেহেন্দিগঞ্জে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের নিয়ে ঈদ পুনর্মিলনীর আয়োজন করেছেন মিজানুর রহমান! মেহেন্দিগঞ্জে বসত বাড়িতে গাঁজা চাষ করে পুলিশের হাতে আটক খোরশেদ আলম রাঢ়ী ! মেহেন্দিগঞ্জে রোজার ছুটিতে টেন্ডার ছাড়াই কলেজের গাছ কেটে নিলেন আলোচিত অধ্যক্ষ!

“দিন দ্যা ডে” রিভিউ-২

জ.নি. ডেস্কঃ
  • প্রকাশ সময়ঃ বৃহস্পতিবার, ২১ জুলাই, ২০২২
  • ১৯৮ বার পড়া হয়েছে

*** সিনেমা: দিন দ্যা ডে… শত কোটি টাকার চপেটাঘাত ***

(অনেক বড় লেখা। শেষ করার ধৈর্য না থাকলে অন্য পোস্টে চলে যান)

কোনটা দিয়ে শুরু করবো তা ভেবে পাচ্ছি না। শতকোটি টাকার কথা নাকি নির্মাণ নাকি অনন্ত-বর্ষা নিয়ে চলমান তান্ডব! হেড লাইনের ব্যাখ্যা পরে দিচ্ছি।

শুরুতেই একটা প্রশ্ন তুলি। এটা আমার এই বড় লেখাটার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যারা ‘দিন দ্যা ডে’ নিয়ে ট্রল করেছে, বাজে বলেছে, অযাচিত আক্রমণ করেছে তারা কি আসলে সিনেমাটি দেখেছে? নাকি ইভেন্টের ভাড়াটিয়া হিসেবে হলে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে সিনেমাটিকে নষ্ট করতে বা না দেখেই লিখেছে সিনেমটি নিয়ে! কারণ কারো লেখাতেই কিংবদন্তী কবি ‘হেলাল হাফিজ’র ‘অমিমাংসিত সন্ধি’ কবিতাটি যে বাংলা এবং ইরানী ভাষায় গান হিসেবে ব্যবহার হয়েছে সেটা নিয়ে কেউ কোন কথা বলে নি। কিন্তু কেন! অথচ এটা তো অনেক বড় চমক, অনেক বড় ঘটনা আমাদের সিনেমার জন্য। অবশ্য আমি কিছু বিব্রতও বোধ করছি। এরা হেলাল হাফিজের নাম জানে তো!

আনন্দ সিনেমা হলে গিয়েছিলাম।একশত’র কাছাকাছি দর্শক ছিল ডিসিতে। রিয়ার স্টলেও দর্শক ছিল। শুধুমাত্র প্রজেক্টরের ব্রাইটনেস আর এসি (বা ২০ টা অতিরিক্ত ফ্যান) যুক্ত হলেই ঢাকার অন্যতম সেরা হল হিসেবে ঘোষণা দেবো তাকে। যদিও গেটম্যান জানালেন শীঘ্রই এগুলো ঠিক করা হবে।

৮০-৯০ দশকের সফল যৌথ প্রযোজনার পর আন্তর্জাতিক সিনেমা হিসেবে কতটা সফল ‘দিন দ্যা ডে’ সে বিচারে যেতে হলে সিনেমাটির বেসিক আপনাকে জানতে হবে। এটি একটি পুলিশ (সোয়াট) অপারেশন সিনেমা। ফলে এখানে প্রেম-ভালবাসা-গান ইত্যাদি মূখ্য তো দূরের কথা গৌন ভুমিকাও রাখার সুযোগ নেই। সিনেমাটির বড় অংশ জুড়েই চেজিং এবং এ্যকশন। এ্যকশন এবং ফাইট এই দুটো ব্যপারকে আমি আলাদাভাবে বিচার করছি। এ্যকশন বলতে পুরো ব্যপারটা আর ফাইট বলতে মুখোমুখি শারিরিক লড়াইটাকে আপাতত বোঝাচ্ছি।

সিনেমাটির যে চেজিং দৃশ্য তা আপনি বাংলাদেশ তো পরের কথা, ভারতের সিনেমাতেও সেভাবে পান নি এটা গ্যারাণ্টি দিচ্ছি। ফাইটিং, ক্যামেরার কাজ, এডিটিং, সাউন্ড এতটা স্মুথ আর নজরকাড়া যে, বলতেই হচ্ছে বাংলাদেশের ৪০ বছরের কোন সিনেমাতে এটা পাওয়া যায় নি। লোকেশন, এরেঞ্জমেন্ট, শট টু শট এবং ফ্রেম টু ফ্রেম যে ম্যাজিক সেটাও চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি বাংলাদেশের কোন সিনেমাতে এভাবে আসে নি।

তবে উপরের কথা পুরোটাই বাংলাদেশের বাইরের শুটিং এর অংশের জন্য প্রযোজ্য। বাংলাদেশের যে অংশটুকু শুটিং হয়েছে সেটা একদমই খানাখন্দে ভরা দেশী সস্তা মাসালা সিনেমার মতোই। ফলে দর্শক হিসেবে উচ্ছ্বাস এবং নিরাশ দুটোই ছিল। তবে দেশের বাইরে প্রায় ৯০% শুটিং হওয়ায় ভাললাগাটাই বেশী।

ইরানের প্রযোজক বাংলাদেশের ফর্মূলায় সিনেমা কেন বানাতে আগ্রহী হলো বুঝতে পারছি না। ছোট-খাটো ভিলেনদের ডায়লগ টিপিক্যাল বাংলাদেশী সিনেমার ভিলেনদের মতোই ছিল। বেশ কিছু শক্তিশালী সংলাপও ছিল। পাশাপাশি কিছু অযৌক্তিক দূর্বল দৃশ্যও ছিল। তবে পুলিশ এ্যকশন সিনেমা হিসেবে এখন পর্যন্ত দেশের সেরা নির্মাণ বলা যায় ‘দিন দ্যা ডে’ কে। আর হ্যা, বিদেশী আর্টিস্টদের ডাবিং কিছু জায়গায় বেশ ভাল হলেও, কিছু কিছু জায়গায় টেলিভিশনে চলা তূর্কি-ইরানী সিরিজের মতো সস্তা রোবটিক ডাবিং হয়েছে।

অনন্ত জলিলের উচিত যিনি সাউন্ডের ফাইনাল মিক্স করেছেন, তার কান বরাবর ঠাডাইয়া একটা থাবড়া মারা। কিছু কিছু জায়গায় ভয়েস লেভেল ঠিক ছিল না। এটা এজন্য বললাম যে, আমাদের দেশের সিংহভাগ সিনেমা হল, সস্তা ক্যাসেট প্ল্যায়ারের সাউন্ডের মতো। সব এক সাথে এক লেভেলে চলে। সেখানে ডলবি বা স্টেরিও (ভুল শব্দ কইলাম কিনা কে জানে!)’র মতো দামী আয়োজন পপকর্ণ হল ছাড়া অন্য কোথাও প্রযোজ্য নয়।

গানের নামে দুটো জঞ্জাল আছে সিনেমাটিতে। তবে গানের ভিজুয়্যাল দৃষ্টিনন্দন। শেষ গানটা নিয়ে বলবো গ্রেট আর্ট ডিরেকশন। কস্টিউম উত্তম। মেকআপ ঠিকঠাক। আর মাসালা সিনেমা হিসেবে দেশী আসল দর্শকদের জন্য কিছু জায়গায় অতি ব্যপারটাও রাখতে হয়েছে, টুকটাক ভুলভালও হয়ত ছিল পুলিশিং ব্যাপরে। তবে তা হিসেবে নেয়ার কিছু নাই। ছাড় দেয়া যায়। আর হ্যা, কিছু জায়গায় স্থানীয় (ইরান/আফগান/তূর্কি) ভাষায় ডায়লগ (বাংলা সাবটাইটেল সহ) ছিল। আমাদের আসল দর্শকদের কথা বিবেচনা করে পুরোটাই বাংলায় ডাবিং রাখা দরকার ছিল।

একটি পরিবারের একজন বদমেজাজী হতে পারে, বোকা হতে পারে, দুষ্টু হতে পারে, উগ্রও হতে পারে। আমরা আমাদের সেই সদস্যটিকে আলাদা করে দেই না। আমরা মেনে নেই সে যেমন, তেমন হিসেবেই। শুধু খেয়াল রাখি যে, সে যেন কোন অপরাধ করে না বসে। অনন্ত-বর্ষা যেমন, তেমনটা মেনে নিয়েই তাদের সিনেমা দেখুন বা দেখা বন্ধ রাখুন। মাত্র ৭ টি সিনেমা করা অনন্তকে নিয়ে ট্রল করার আগে ২০/৩০ টি সিনেমা করাদের পারফরমেন্সের কথাও একটু মাথায় নিয়েন। শুধুমাত্র জাতে উঠার জন্য কাউকে নিয়ে নোংরামী করতে গিয়ে দশ দিনের মজা হয়ত পাচ্ছেন। কিন্তু তার বিপরীতে আপনার মনে যে আবর্জনা জমছে সেটার কি করবেন!

বাই দ্যা ওয়ে, অনন্ত আগের চেয়ে ভাল ডায়লগ ডেলিভারী দিয়েছে। উচ্চারণ ত্রুটি ছিল না বললেই চলে। কান্নার দৃশ্যে দুজনের কেউ ফিলিংসটার জন্ম দিতে পারে নি। কারণ কান্নার আগে যে ফিলিংসটার জন্ম হবার কথা, তা চিত্রনাট্যে থাকলেও সঠিক দৃশ্যায়ন, অন্যদের ডায়লগ ডেলিভারী এবং মিউজিকের কারণে দানা বাধে নি।

এবার আসি আসল কথায়।
সিনেমাটি কোনভাবেই ১০০ কোটি টাকার সিনেমা নয়। হয়ত এটি সিনেমার স্ট্যান্টবাজি ছিল। স্ট্যান্টবাজি কখনই খারাপ কিছু নয়। তবে সিনেমাটি অবশ্যই কোটি কোটি টাকার সিনেমা। সিনেমার যে লোকেশন, যে এরেঞ্জমেন্ট, যে দৃশ্যায়ন, ক্যামেরা এবং ড্রোনের কাজ, স্ট্যান্ট দৃশ্য, এ্যকশন দৃশ্য, ফাইট এবং সবচেয়ে বড় যে ব্যপার তা হচ্ছে যে পরিমাণ শট ব্যবহার হয়েছে তা বাংলাদেশী সিনেমায় কবে কখন দেখেছেন তা খুজেঁ পাওয়া দুস্কর। ‘পরাণ’ সিনেমা নিয়ে বলেছিলাম, বাজেট কমাতে পর্যাপ্ত শট না নিয়ে বড় শটেই কাজ শেষ করেছে। এখানে ঠিক তার বিপরীত। বাজেট বেশী বলে শটের ম্যাজিক ছিল। তবু বলছি সিনেমাটি কোনভাবেই ১০০ কোটি টাকার সিনেমা নয়। কিন্তু সিনেমাটি কোটি কোটি টাকার সিনেমা। আরো সহজভাবে বলতে হলে এভাবে বলবো যে: ইমপ্রেস বা লাইভ টেকনোলজি বিগত দিনের সাথে আগামী ১০ বছরে সকল সিনেমার বাজেট যোগ করলেও ‘দিন দ্যা ডে’র বাজেট স্পর্শ করতে পারবে না। জাজ মাল্টিমিডিয়া এখন পর্যন্ত যত সিনেমা বানিয়েছে নিজের টাকায় বা অন্যের টাকায়, সব টাকা এক করলেও ‘দিন দ্যা ডে’র বাজেটকে স্পর্শ করতে পারবে না।

দিন দ্যা ডে’র বাজেট কোনভাবেই ১০০ কোটি টাকা নয়। তবে অবশ্যই শত কোটি টাকার চপেটাঘাত তাদের প্রতি, যারা সিনেমার মানুষ হয়েও সিনেমা নিয়ে বিদ্বেষ লালন করে। যারা সিনেমার দর্শক হয়েও শুধুমাত্র সস্তা বিনোদন বা ২০০ টাকার জন্য সিনেমার মানুষকে ব্যাক্তিগত আক্রমণ করে শুধুমাত্র সিনেমার ক্ষতি করার জন্য। যারা সিনে সাংবাদিক হিসেবে রিজিক চালালেও, সিনেমার ক্ষতি করতে যাবতীয় অপ-সাংবাদিকতা করে গিয়েছে। কারণ প্রকৃত দর্শক সিনেমা নিয়ে ভাল লাগা/মন্দ লাগা নিয়ে বের হবে। সেটা জানাবেও। কিন্তু তান্ডব চালাবে না

সূত্রঃ লেখক, সাংবাদিক, নির্মাতা তির্থক আহসান রুবেল’র ফেসবুক পোস্ট থেকে সংগৃহীত।

দয়া করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
May 2023
S M T W T F S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
© All rights reserved © 2023 Janatarnissash
Theme Dwonload From