নির্বাচনের পর নতুন সরকার, নতুন মন্ত্রী। আবারও চলচ্চিত্র নির্মাণে অনুদানের প্রস্তুতি। বড় অংকের অর্থ। গত বছর যারা অনুদান পেয়েছেন ওদের নির্মীয়মান চলচ্চিত্রের খবর কি? আমার জানা নেই। কাদেরকে অনুদান দেয়া হলো? ওনারা কি আদতে চলচ্চিত্র শিল্পের নির্মাতা কিংবা প্রযোজক? নাকি ভুঁইফোড় প্রতিষ্ঠান গড়ে অনুদানের কোটিকোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতা?
প্রথমেই যে বিষয়টা আমার কাছে পরিষ্কার নয় সেটা হলো প্রতি বছর সরকার কোটিকোটি টাকা অনুদান দেয় কোন্ উদ্দেশ্যে? বিশেষ কিছু মানুষের পকেট কিংবা ভ্যানিটি ব্যাগ ভারী করতে নাকি চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নের লক্ষ্যে? অনুদানের টাকায় যারা সিনেমা নির্মাণ করেন ওনাদের উদ্দেশ্য কি চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়ন? অনুদান তো প্রতি বছরই দেয়া হচ্ছে। কিন্তু আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পে এই বিরাট অংকের অর্থ ব্যয়ের ফলে কি আদতেও প্রাণ সঞ্চারিত হয়েছে বা হচ্ছে?
একদম রাখঢাক না রেখেই বলবো, যাদেরকে অনুদান দেয়া হয় তারা কোন্ যোগ্যতায় এটা পান। হ্যাঁ, মাত্র ২-৩ জন এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। কিন্তু বাকি সবাই তো অনুদান পান তদবিরের জোরে কিংবা নিজেদের রাজনৈতিক পদবী খাটিয়ে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ও এক্ষেত্রে অনেকটাই যেনো ভাবলেশহীন। সরকারি টাকা খরচে ওনাদের সত্যিকার অর্থেই কোনো বাছবিচার নেই। মানে, প্রাচীন ওই প্রবাদের মতোই – সরকারের মাল, দরিয়ায় ঢাল। প্রতি বছর অনুদানের নামে এক বিশাল হরিলুট।
সাংবাদিকতার পেশার কারণে এবং বিনোদন জগতের সাথে সম্পর্কের কারণে আমি জানি, প্রতি বছরই যোগ্য কিছু নির্মাতা ভালো গল্প, যেগুলো বাণিজ্যিকভাবেও সফল হওয়ার মতো, এমন প্রস্তাবনা জমা দিয়ে অনুদান পান না। কারণ ওনাদের খুঁটির জোর নেই কিংবা রাজনৈতিক পরিচয় খাটানোর মতো অসুস্থ মানসিকতা নেই। একারণেই ওনাদের প্রস্তাবগুলো আমলেই নেয়া হয়না।
আমি চ্যালেঞ্জ করেই বলতে পারি, এ বছরও বহু অযোগ্য এবং বিতর্কিত লোকেরাই অনুদানের কোটিকোটি টাকার ভাগ পাবেন। ঠিক আগের মতোই। একই অসুস্থ ধারার আরেক পুনরাবৃত্তি। আবারও সরকারি টাকার হরিলুট। রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয়। এর শেষ কোথায় আমরা কেউই জানিনা।