শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৪২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
নন্দিত গীতিকবি মিলন খানের আজ শুভ জন্মদিন ভালোবাসি তোমায় সিনেমার ক্যামেরা ক্লোজ চৌদ্দগ্রাম প্রেসক্লাবের নতুন কমিটি গঠন তৌহিদ সভাপতি, সম্পাদক সোহাগ, সাংগঠনিক ফারুক গানের হাট অডিও স্টুডিও এর শুভ উদ্বোধন হলো চলচ্চিত্রে অনুদানের অজুহাতে রাষ্ট্রীয় অর্থের হরিলুট: সালাহ্ উদ্দিন শোয়েব চৌধুরী গান বাজনা সম্পর্কে কিছু কথা প্রসঙ্গ শুভ্র দেবের একুশে পদকঃ ফরিদুল আলম ফরিদ শেখ কামাল হোসেন এর কথা ও সুরে, চম্পা বণিক এর গাওয়া ‘একুশ মানে’ শিরোনামের গানটি আজ রিলিজ হলো নোয়াখালীতে প্রসূতিসহ নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় সাংবাদিকের মামলা, তদন্তে পিবিআই ‘দম’ সিনেমা নিয়ে ফিরছেন পরিচালক রেদওয়ান রনি

পদ্মায় ট্রেন চলছে ১০ অক্টোবর থেকে, ঢাকা-ফরিদপুর সম্ভাব্য ভাড়া ২০০

হেলাল মাহমুদ তন্ময়
  • প্রকাশ সময়ঃ বুধবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৩
  • ৮৩ বার পড়া হয়েছে

দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন পূরণে গত বছরের ২৫ জুন স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই স্বপ্নের পদ্মা সেতু দিয়ে বাকি ছিল রেল যোগযোগ। অবশেষে সেই দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের আর একটি স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়েছে আগামী ১০ অক্টোবর থেকে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় ২০১৯ সালে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত প্রায় ১৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেলপথ নির্মাণকাজ শুরু করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ঢাকা কমলাপুর থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৮২ কিলোমিটার রেলপথ চালু হয়েছে আগামী ১০ অক্টোবর থেকে। এছাড়া আগামী বছরের জুনে যশোর পর্যন্ত রেল চালুর লক্ষ্য ঠিক করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।

মোট ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রায় ১৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেলপথ নির্মাণের কাজ করছে ঠিকাদার চীনের চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (সিআরইসি)। এতে ফরিদপুরসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে গোটা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের নতুনমাত্রা যোগ হবে। এদিকে, পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেন চলার খবরে উচ্ছ্বসিত দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ।

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভাস্থল পরিদর্শনে এসে ঢাকা বিভাগের আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০ অক্টোবর রেল যোগাযোগের উদ্বোধন করেন। এরপর কাজী আবু ইউসুফ স্টেডিয়ামে জনসভায় ভাষণ দেন। সেখানেই প্রধানমন্ত্রী আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়ে নেতাকর্মীদের দিক নির্দেশনামূলক কথা বলেন।

পদ্মা সেতু দিয়ে রেল চলাচলের বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামিম হক জানান, পদ্মা সেতু চালুর পর থেকেই ফরিদপুরের মানুষের মাঝে খুশির আমেজ বইছে। ফরিদপুরবাসীর ঢাকা যাতায়াতে ৭ থেকে ৮ঘণ্টা সময় লাগত। সেখানে বর্তমানে দু’ঘণ্টায় ঢাকা যাতায়াত করা যাবে। ১০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেল যোগাযোগের উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের সবক্ষেত্রে জীবনমানের পরিবর্তন হয়েছে। এর মাধ্যমে এ অঞ্চলের মানুষের একটি পর একটি স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে।

পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচলের বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসতিয়াক হোসনে আরিফ বলেন, পদ্মা সেতু আমাদের স্বপ্ন। আর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে করে শুধু ফরিদপুর নয়, গোটা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের আশা পূরণ হয়েছে।

ফরিদপুরের গণমানুষের নেতা, নগর কান্দা উপজেলা আওয়ামীলীগ এর সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট জামাল হোসেন মিয়া বলেন, পদ্মা সেতু এবং রেলের সুফল পাবে ফরিদপুর তথা দক্ষিণাঞ্চল লাখ লাখ মানুষ। আগে সড়ক পথে বাসে ঢাকায় যেতে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ভাড়া লাগত। সেখানে রেলে ঢাকায় যেতে ভাড়া লাগবে সর্বনিম্ন ১১০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা। শুধু ব্যবসায়ীদের নয়, খেটে খাওয়া, গরীব, অসহায় মানুষের বাহন হবে রেল। এতে স্বল্প আয়ের মানুষের ব্যবসা-বাণিজ্য করতে যোগাযোগ সুবিধার পাশাপাশি সবক্ষেত্রে লাভবান হবেন।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালুর পর এবার রেল নিয়ে নতুন পরিকল্পনার স্বপ্ন বুনছে। দক্ষিণের মানুষ ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে রেলপথে ঘরে ফিরবে। রেল ভ্রমণ সব সময়ই নিরাপদ ও সাশ্রয়ী। আমরা আশা করছি, শুধু যাত্রী নয়, পণ্য পরিবহনেও ব্যবসায়ীরা ঝুঁকবেন রেলপথে।

ফরিদপুর রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার তাকবীর হোসেন বলেন, এখন পর্যন্ত রেলের ভাড়া কোন দিক নির্দেশনা আসেনি। তবে, ঢাকা-ফরিদপুর জনপ্রতি ১৫০ থেকে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা হতে পারে। আমরা আশা করছি আগামী কয়েক দিনের মধ্যে যাত্রী এবং পণ্য ভাড়াসহ যাবতীয় কার্যক্রম শেষ হবে। এতোটুকু বলতে পারি বাসের থেকে অনেক কম খরচে ফরিদপুর-ঢাকা রেলে যাতায়াত করতে পারবেন সাধারণ মানুষ।

১০ই অক্টোবর রেল সড়ক উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ট্রেনে করে ফরিদপুরে জনসভায় যোগ দেন।

দক্ষিণে রেল আরও একটি স্বপ্নপূরণ

স্বপ্নের পদ্মা সেতু ছিল দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা। সেই স্বপ্নের রেশ কাটতে না কাটতেই আরেকটি উৎসব আর আনন্দে ভাসছে এ অঞ্চলের মানুষ। স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে সড়কের পরে এবার খুলল রেলপথ। আরেকটি স্বপ্ন পূরণ হলো দেশের দক্ষিণের মানুষের। বলা যায়, দক্ষিণে রেলগাড়ির শুভ প্রবেশ ঘটল। পদ্মা সেতুতে বাস চলাচল উদ্বোধনের এক বছরের বেশি সময় পর ট্রেন চলাচল শুরু।
গতকাল দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের আরেকটি স্বপ্ন পূরণ হলো। দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে ডিজিটাল সুইচ টিপে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন। দুপুর ১২টা ৫২ মিনিটে ট্রেনের টিকিট কাটেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশের আরেকটি কাউন্টারে একই সময়ে টিকিট কাটেন বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা। তাঁদের পরিবারের শিশু সদস্যদের জন্য টিকিট সংগ্রহ করেন। টিকিট সংগ্রহের পর প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর পরিবারের উপস্থিত সদস্যদের সেখানে টিকিট দেখাতে দেখা যায়। দুপুর ১২টা ৫৪ মিনিটে সবুজ পতাকা দুলিয়ে এ ট্রেন সার্ভিসের উদ্বোধন করেন তিনি। এরপর তিনি ট্রেনে ওঠেন। দুপুর ১২টা ৫৯ মিনিটে ট্রেনটি মাওয়া স্টেশন থেকে ফরিদপুরের উদ্দেশে রওনা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানাও ছিলেন। বেলা ২টার দিকে ভাঙ্গা স্টেশনে পৌঁছায় দক্ষিণের মানুষের স্বপ্নের ট্রেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, ইমাম, বিভিন্ন পেশাজীবী, সরকারি চাকরিজীবী, রিকশাচালক, সবজি বিক্রেতা, দিনমজুর থেকে শুরু করে রাজনৈতিক নেতা-মন্ত্রীসহ প্রায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ট্রেনে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে ছিলেন।
ট্রেনে উঠে আসনে বসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মোনাজাত করতে দেখা যায়। এ সময় তিনি দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানান। ট্রেনের প্রথম কামরায় ওঠেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানাসহ মন্ত্রিসভার সদস্যরা, আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, সিনিয়র সচিবসহ ভিআইপিরা। দ্বিতীয় কামরায় বিভিন্ন বাহিনী প্রধান, সিনিয়র সাংবাদিক ও প্রধানমন্ত্রীর নিয়মিত সংবাদ সংগ্রহকারী কয়েকজন সংবাদকর্মী। প্রথম ও দ্বিতীয় কামরায় ঘুরে ঘুরে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সবার সঙ্গে তিনি ছবিও তোলেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবাইকে মনে করিয়ে দেন, তিনি পদ্মাপাড়ের মেয়ে হিসেবে এসেছেন যাত্রীদের সঙ্গে কুশলবিনিময় করতে। সফরসঙ্গীরা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। মাওয়া থেকে ভাঙ্গাগামী ১৪ বগিবিশিষ্ট বিশেষ ট্রেন শেখ হাসিনাকে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতু পার হয়। প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী উদ্বোধনী ট্রেনটিও সাজানো হয়েছে রঙ-বেরঙের ফেস্টুন ও ফুলে।

দয়া করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
April 2024
S M T W T F S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031