আজ সকাল সাড়ে নয়টা থেকে এই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণির ক্লাস শুরুর কথা ছিল। তবে সকাল আটটা থেকেই শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা স্কুলের সামনে ভিড় জমান। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা স্কুলে আসেন। হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়। করোনার বিষয়ে সচেতনতায় ছিল নানা উদ্যোগ।
শিক্ষার্থীরা সারিবদ্ধভাবে মূল ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে যায়। সেখানে কিছুটা গাদাগাদি অবস্থা দেখা যায়। শরীরের তাপমাত্রা মাপা হয়। এরপর শ্রেণিকক্ষে গিয়ে প্রতি বেঞ্চে দুজন করে বসে পড়ে। ভেতরে প্রস্তুত ছিল আইসোলেশন কক্ষ।
তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী নাজমুন নাহার বলে, অনেক দিন পর স্কুল খোলায় ঈদের আনন্দের মতো লাগছে। বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। সরাসরি শিক্ষকদের সঙ্গে কথা হচ্ছে। অনেক ভালো লাগছে।
এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জহুরা খাতুন বলেন, দীর্ঘ দেড় বছর পর শিশুরা স্কুলে ফিরতে পেরেছে। এই সময়ে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার অনেক ক্ষতি হয়েছে। আর স্কুল বন্ধ নয়, স্বাস্থ্যবিধি মেনে কমপক্ষে সপ্তাহে এক দিন হলেও স্কুল খোলা রাখা হোক।
এদিকে কয়েকজন শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মাস্ক ছাড়া স্কুলে এসেছিলেন। প্রবেশপথে তাঁদের বিনা মূল্যে মাস্ক দেওয়া হয়। মূল ফটকের সামনে বসানো হয়েছিল হেল্পডেস্ক। সেখান থেকে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নানা তথ্য দিচ্ছিলেন দুজন শিক্ষিকা।
স্কুলের সহকারী শিক্ষক ফাতেমা ফেরদৌসি বলেন, শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের আনন্দই আলাদা। বন্ধের ভেতরে অনলাইনে ক্লাস হয়েছে। তবে অনেকে অনলাইনে যুক্ত হতে পারত না। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হতো না। প্রাণচাঞ্চল্য ছিল না।
নারায়ণগঞ্জ শহরের ইসদাইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীদের ভেতরে প্রবেশ করানো হচ্ছে। সেখানে ছিল হাত ধোয়ার জন্য সাবানপানি, আইসোলেশন কক্ষ ও তাপমাত্রার মাপার যন্ত্র।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফা জহুরা বলেন, স্কুলগুলোতে স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ অন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী পর্যাপ্ত রাখতে বলা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে। তিনি প্রথম দিন কয়েকটি স্কুল পরিদর্শন করেছেন। সব মিলিয়ে পরিবেশ সন্তোষজনক।