নির্মিত হলো তথ্যচিত্র ‘চলচ্চিত্রে আমাদের ৫০ বছর’।
এই তথ্যচিত্রটি নির্মাণ করেছেন পরিচালক ছটকু আহমেদ। এক ঝাঁক নির্মাতার চলচ্চিত্রে রাখা তাদের অবদানের বিষয়টি এই তথ্যচিত্রে আলোকপাত করা হয়েছে। তবে এক ঝাঁক নির্মাতার মধ্যে কেউ কেউ ইতোমধ্যে মারাও গেছেন। তথ্যচিত্রটিতে তাদেরকেও স্মরণ করা হয়েছে। তথ্যচিত্রটি মুক্তি পাবে ১৬ জুলাই। স্বাধীনতা উত্তর ১৯৭২ সালের এই দিনেই তারা কাজ শুরু করেছেন। তাদের সার্বিক পৃষ্ঠপোষকতায় ছিলেন ব্যবসায়ী ও প্রযোজক হাবিবুর রহমান খান।
পশ্চিমবঙ্গের ব্যতিক্রমধর্মী চলচ্চিত্রের নির্মাতা ঋত্বিক কুমার ঘটকের ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ ছবি দিয়ে তিনি প্রযোজক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। চলতি বছরের ১৬ জুলাই চলচ্চিত্রে তার ৫০ বছর পূর্ণ হবে। এরপর তিনি প্রযোজনা করেন পদ্মানদীর মাঝি, হঠাৎ বৃষ্টি, মনের মানুষ, শঙ্খচিলসহ আরো অনেক ছবি। তিনি বরাবরই লক্ষ্য ছিল সাহিত্যনির্ভর বা শিল্পশোভন চলচ্চিত্র নির্মাণের দিকে। তিনি দুটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। একটি হলো আশীর্বাদ চলচ্চিত্র। এই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানটি শুধু যে শিল্পশোভন চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছে তা নয়। এই প্রতিষ্ঠান থেকে অনেক উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র পরিবেশিতও হয়েছে। এর মধ্যে গিয়াসউদ্দিন সেলিমের ‘মনপুরা’ ছবির নাম উল্লেখ করা যায়।
এছাড়া তিনি ছবির কাজের জন্য ১৯৭২ সালের ১৬ জুলাইতেই এক করলেন একঝাঁক মেধাবী তরুণকে। ছবির পেছনে নানা ভূমিকায় কাজ করলেন ফখরুল হাসান বৈরাগী, তমিজ উদ্দীন রিজভী, আখন্দ সানোয়ার মোরশেদ, শমসের আহমেদ, আওলাদ হোসেন চাকলাদার, এ জে মিন্টু ও ছটকু আহমেদ। ছবিটা প্রশংসিত হলেও ব্যবসায়িক সাফল্য পায়নি। হাল ছাড়লেন না হাবিবুর রহমান খান। এরপর তিনি গড়ে তোলেন – ‘শাওন সাগর লিমিটেড’। সাতজন ছিলেন এই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক। চলচ্চিত্রকার মহীউদ্দিন হলেন চেয়ারম্যান। সৈয়দ হাসান ইমামের তখন আলাদা প্রতিষ্ঠান থাকলেও এই প্রতিষ্ঠানের উপদেষ্টা হন তিনি। পরিকল্পনা হলো, ছয়জন ডিরেক্টরের প্রত্যেকেই বাই-রোটেশনে ছবি পরিচালনা করবেন। একজন ছবি পরিচালনা করলে বাকি পাঁচজন সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করবেন। প্রথম ছবি ফ্লপের পর প্রযোজক হাবিবুর রহমান খান নিজের হাত খরচের টাকা দিয়ে বৈরাগীর পরিচালনায় নির্মাণ করেন ‘সেয়ানা’ নামে একটি ছবি। অলিভিয়া আর প্রবীর মিত্র নায়ক-নায়িকা। কিন্তু ‘সেয়ানা’ ছবিটিও ফ্লপ হলো। এরপর ‘শাওন সাগর লিমিটেড’ থেকে পালাক্রমে ছবি নির্মাণ করতে শুরু করেন ব্যানারটিতে জড়ো হওয়া তরুণ নির্মাতারা।
গত ৫০ বছরে হাবিবুর রহমান খানের পৃষ্ঠপোষকতায় অসংখ্য জনপ্রিয় ছবি উপহার দিয়েছেন এইসব তরুণ মেধাবীরা। তাদের সেই অবদানের কথা তুলে ধরতেই ছটকু আহমেদ তৈরি করছেন তথ্যচিত্র ‘চলচ্চিত্রে আমাদের ৫০ বছর’। ছটকু আহমেদসহ নির্মাতা এ জে মিন্টু, ফখরুল হাসান বৈরাগী, তমিজ উদ্দিন রিজভী, প্রযোজক হাবিবুর রহমান খান ও শমশের আহমেদকে নিয়ে তৈরি হয়েছে এই তথ্যচিত্র।
ছটকু আহমেদ বলেন, ‘চলচ্চিত্রে আমাদের ৫০ বছর পূর্ণ হবে। এই ৫০ বছরে আমরা সাধ্যমতো কাজ করেছি চলচ্চিত্রের উন্নয়নে। আমাদের স্ট্রাগল ছিল। আমাদের সোনালি দিন ছিল। আমরা কীভাবে হাতে হাত ধরে বাংলা চলচ্চিত্র দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছি, সেটা বলব এই তথ্যচিত্রে।’