শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৭:১৭ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
ভালোবাসি তোমায় সিনেমার ক্যামেরা ক্লোজ চৌদ্দগ্রাম প্রেসক্লাবের নতুন কমিটি গঠন তৌহিদ সভাপতি, সম্পাদক সোহাগ, সাংগঠনিক ফারুক গানের হাট অডিও স্টুডিও এর শুভ উদ্বোধন হলো চলচ্চিত্রে অনুদানের অজুহাতে রাষ্ট্রীয় অর্থের হরিলুট: সালাহ্ উদ্দিন শোয়েব চৌধুরী গান বাজনা সম্পর্কে কিছু কথা প্রসঙ্গ শুভ্র দেবের একুশে পদকঃ ফরিদুল আলম ফরিদ শেখ কামাল হোসেন এর কথা ও সুরে, চম্পা বণিক এর গাওয়া ‘একুশ মানে’ শিরোনামের গানটি আজ রিলিজ হলো নোয়াখালীতে প্রসূতিসহ নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় সাংবাদিকের মামলা, তদন্তে পিবিআই ‘দম’ সিনেমা নিয়ে ফিরছেন পরিচালক রেদওয়ান রনি চলচ্চিত্র শিল্প সংশ্লিষ্টদের সংগঠন বাংলাদেশ ফিল্ম ক্লাবের নির্বাচনে জয়ী হলেন যারা

কিংবদন্তি অভিনেতা হুমায়ুন ফরিদীর শুভ জন্মদিন

জ.নি. ডেস্কঃ
  • প্রকাশ সময়ঃ রবিবার, ২৯ মে, ২০২২
  • ৪৯৮ বার পড়া হয়েছে

১৯৫২ সালের ২৯ মে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। প্রখ্যাত এই অভিনেতা অভিনয় মাধ্যমের সবকটা শাখায় অভাবনীয় প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেছেন। বাংলাদেশের নাটক ও সিনেমায় এক উজ্জলতম নক্ষত্র তিনি।

হুমায়ূন ফরীদি
জন্ম: ২৯ মে ১৯৫২ – মৃত্যু: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১২
অভিনেতা। তিনি মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য খ্যাতি অর্জন করেন। ১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে ফরীদি চলচ্চিত্র জগতে আগমন করেন। তাকে বাংলা চলচ্চিত্রের একজন কিংবদন্তি অভিনেতা হিসেবে বিভিন্ন মাধ্যমে উল্লেখ করা হয়। তিনি মাতৃত্ব চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে দেশটির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করে।

হুমায়ূন ফরীদি ১৯৫২ সালের ২৯ মে ঢাকার নারিন্দায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম এটিএম নূরুল ইসলাম ও মা বেগম ফরিদা ইসলাম। চার ভাই-বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। তিনি ১৯৬৫ সালে পিতার চাকুরীর সুবাদে মাদারীপুরের ইউনাইটেড ইসলামিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এ সময় মাদারীপুর থেকেই নাট্য জগতে প্রবেশ করেন। তার নাট্যঙ্গনের গুরু বাশার মাহমুদ। তখন নাট্যকার বাশার মাহমুদের শিল্পী নাট্যগোষ্ঠী নামের একটি সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়ে কল্যাণ মিত্রের ‘ত্রিরত্ন’ নাটকে ‘রত্ন’ চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে তিনি সর্বপ্রথম দর্শকদের সামনে আত্মপ্রকাশ করেন। এরপর এই সংগঠনের সদস্য হয়ে ‘টাকা আনা পাই’, ‘দায়ী কে’, ‘সমাপ্তি’, ‘অবিচার’সহ ৬টি মঞ্চ নাটকে অংশ নেন।

অবশেষে ১৯৬৮ সালে মাধ্যমিক স্তর উত্তীর্ণের পর পিতার চাকুরীর সুবাদে চাঁদপুর সরকারি কলেজে পড়াশোনা করেন। উচ্চ মাধ্যমিক শেষে ওই বছরেই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জৈব-রসায়ন বিভাগে ভর্তি হন। যদিও ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায় এবং শিক্ষা অসমাপ্ত রেখেই মুক্তিযুদ্ধে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধের পর ফিরে এসে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান), স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি আল-বেরুনী হলের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে তিনি বিশিষ্ট নাট্যকার সেলিম আল-দীনের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন।

১৯৭৬ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত নাট্য উৎসবে তিনি অন্যতম সংগঠক ছিলেন। মূলতঃ এ উৎসবের মাধ্যমেই তিনি নাট্যাঙ্গনে পরিচিত মুখ হয়ে উঠেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থাতেই তিনি ঢাকা থিয়েটারের সদস্যপদ লাভ করেন।

ফরীদি ১৯৮৪ সালে তানভীর মোকাম্মেলের হুলিয়া স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে তার অভিষেক ঘটে শেখ নিয়ামত আলীর দহন (১৯৮৫) চলচ্চিত্র দিয়ে। এই চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেন।তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত বিখ্যাত সংশপ্তক নাটকে ‘কানকাটা রমজান’ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য বিখ্যাত হয়েছিলেন।

২০০৪ সালে ফরীদি দুটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন, সেগুলো হল হুমায়ূন আহমেদের শ্যামল ছায়া ও তৌকীর আহমেদের জয়যাত্রা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। এই বছর তিনি মাতৃত্ব চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।

হুমায়ূন ফরীদির কবরের ফলক
ব্যক্তিগত জীবনে হুমায়ূন ফরীদি দুবার বিয়ে করেন। প্রথম বিয়ে করেন ১৯৮০’র দশকে। শারারাত ইসলাম দেবযানী নামের তার এক মেয়ে রয়েছে এ সংসারে।পরবর্তীতে অভিনেত্রী সুবর্ণা মোস্তফাকে বিয়ে করলেও ২০০৮ সালে তাদের মধ্যে বিবাহ-বিচ্ছেদ ঘটে।

তিনি ২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ধানমন্ডিতে তার নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর। এর পূর্বে তার রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যাওয়ায় তাকে ঢাকার মডার্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে আসার পর তিনি ১৩ ফেব্রুয়ারি বাথরুমে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান। এই আঘাতেই তার মৃত্যু হয়।

চলচ্চিত্রের তালিকা

সন্ত্রাস
দহন
লড়াকু
দিনমজুর
বীর পুরুষ
বিশ্ব প্রেমিক
আজকের হিটলার
দুর্জয়
শাসন
আঞ্জুমান
আনন্দ অশ্রু
* মায়ের অধিকার
আসামী বধু
একাত্তরের যীশু – মুক্তিযোদ্ধা
প্রাণের চেয়ে প্রিয় – বিল্লাত আলী
ভালোবাসি তোমাকে
কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি
প্রবেশ নিষেধ
ভণ্ড
“ঘাতক”
টাকার অহংকার
অধিকার চাই
ম্যাডাম ফুলি
মিথ্যার মৃত্যু
* বিদ্রোহী চারিদিকে
মনে পড়ে তোমাকে
মাতৃত্ব
টাকা – আরমান চৌধুরী
ব্যাচেলর
জয়যাত্রা
শ্যামল ছায়া – মুক্তিযোদ্ধা
দূরত্ব
চেহারা
আহা! – কিসলু
কি যাদু করিলা – কামাল চেয়ারম্যান
মেহেরজান – খন্দকার
“বাংলার বধূ
এক জবানের জমিদার হেরে গেলেন এইবার – জমিদার(শেষ চলচ্চিত্র)

টিভি নাটক

নিখোঁজ সংবাদ
হঠাৎ একদিন
পাথর সময়
সংশপ্তক
সমূদ্রে গাংচিল
কাছের মানুষ
মোহনা
নীল নকশাল সন্ধানে (১৯৮২)
দূরবীন দিয়ে দেখুন (১৯৮২)
ভাঙ্গনের শব্দ শুনি (১৯৮৩)
কোথাও কেউ নেই
সাত আসমানের সিঁড়ি
সেতু কাহিনী (১৯৯০)
ভবের হাট (২০০৭)
শৃঙ্খল (২০১০)
জহুরা
আবহাওয়ার পূর্বাভাস
প্রতিধ্বনি
গুপ্তধন
সেই চোখ
অক্টোপাস
বকুলপুর কত দূর
মানিক চোর
“আমাদের নুরুল হুদা” ৬০ তম পর্ব থেকে।

মঞ্চ নাটক

ত্রিরত্ন (প্রথম অভিনয়)
কিত্তনখোলা
মুন্তাসির ফ্যান্টাসি
কিরামত মঙ্গল (১৯৯০)
ধূর্ত উই
পুরস্কার ও স্বীকৃতি সম্পাদনা
২০০৪: মাতৃত্ব চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
নাট্যাঙ্গনে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে তাকে সম্মাননা প্রদান করেন।
২০১৮: শিল্পকলায় একুশে পদক (মরণোত্তর)

হুমায়ুন ফরীদির অভিনয়ের শুরুটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-বেরুনী হলে থাকতেন এ অভিনেতা। আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় নাট্য প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নাট্যচার্য সেলিম আল দীনের নজরে পড়েন তিনি। এরপর যুক্ত হন ঢাকা থিয়েটারের নাট্যচর্চার সঙ্গে। ঢাকা থিয়েটারের হয়ে মঞ্চে অভিনয় করেন কিত্তনখোলা, মুন্তাসির ফ্যান্টাসি, কেরামত মঙ্গল, ধূর্ত উই প্রভৃতি নাটকে। কেরামত মঙ্গল নাটকে কেরামত চরিত্রে হুমায়ুন ফরীদির অভিনয় এখনও আলোচিত হয় ঢাকার মঞ্চে।

টিভি নাটকে হুমায়ুন ফরীদি আলোচনায় আসেন শহিদুল্লাহ কায়সারের উপন্যাস অবলম্বনে আবদুল্লাহ আল মামুন নির্মিত ‘সংশপ্তক’ ধারাবাহিক নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। নাটকটিতে কানকাটা রমজান চরিত্রে অভিনয় করে দারুণ প্রশংসা অর্জন করেন হুমায়ুন ফরীদি। এরপর দীর্ঘ সময় তিনি ছোটপর্দায় সাফল্যের সঙ্গে অভিনয় করেছেন।

তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটক ‘শকুন্তলা’, ‘ফণীমনসা’, ‘কীত্তনখোলা’, ‘মুন্তাসির ফ্যান্টাসি’, ‘কেরামত মঙ্গল’ প্রভৃতি। ১৯৯০ সালে নিজের পরিচালনায় ‘ভূত’ দিয়ে শেষ হয় ফরীদির ঢাকা থিয়েটারের জীবন।

আতিকুল হক চৌধুরীর প্রযোজনায় ‘নিখোঁজ সংবাদ’ ফরীদির অভিনীত প্রথম টিভি নাটক। তাঁর অন্য নাটকগুলোর মধ্যে ছিলো ‘সংশপ্তক’, ‘হঠাৎ একদিন’, ‘একটি লাল শাড়ি’, ‘নীল নকশার সন্ধানে’, ‘দূরবীন দিয়ে দেখুন’, ‘বকুলপুর কতদূর’, ‘মহুয়ার মন’, ‘সাত আসমানের সিঁড়ি’, ‘একদিন হঠাৎ’, ‘কাছের মানুষ’, ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘মোহনা’, ‘ভবেরহাট’, ‘জহুরা’, ‘আবহাওয়ার পূর্বাভাস’ ইত্যাদি।

ফরীদির প্রথম সিনেমায় অভিনয় শুরু হয় তানভীর মোকাম্মেলের ‘হুলিয়া’র মধ্য দিয়ে। এরপর, তাঁর অভিনীত সিনেমার মধ্যে রয়েছে ‘সন্ত্রাস’, ‘বীরপুরুষ’, ‘দিনমজুর’, ‘লড়াকু’, ‘দহন’, ‘বিশ্বপ্রেমিক’, ‘কন্যাদান’, ‘আঞ্জুমান’, ‘পালাবি কোথায়’, ‘একাত্তরের যীশু’, ‘ব্যাচেলর’, ‘জয়যাত্রা’, ‘শ্যামল ছায়া’ প্রমুখ।

২০১২ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত টিভি নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি।

সূত্রঃ অভিনেতা এবিএম সোহেল রশিদ এর ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে সংগৃহীত।

দয়া করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
March 2024
S M T W T F S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
2526272829