শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০১:০৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
ভালোবাসি তোমায় সিনেমার ক্যামেরা ক্লোজ চৌদ্দগ্রাম প্রেসক্লাবের নতুন কমিটি গঠন তৌহিদ সভাপতি, সম্পাদক সোহাগ, সাংগঠনিক ফারুক গানের হাট অডিও স্টুডিও এর শুভ উদ্বোধন হলো চলচ্চিত্রে অনুদানের অজুহাতে রাষ্ট্রীয় অর্থের হরিলুট: সালাহ্ উদ্দিন শোয়েব চৌধুরী গান বাজনা সম্পর্কে কিছু কথা প্রসঙ্গ শুভ্র দেবের একুশে পদকঃ ফরিদুল আলম ফরিদ শেখ কামাল হোসেন এর কথা ও সুরে, চম্পা বণিক এর গাওয়া ‘একুশ মানে’ শিরোনামের গানটি আজ রিলিজ হলো নোয়াখালীতে প্রসূতিসহ নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় সাংবাদিকের মামলা, তদন্তে পিবিআই ‘দম’ সিনেমা নিয়ে ফিরছেন পরিচালক রেদওয়ান রনি চলচ্চিত্র শিল্প সংশ্লিষ্টদের সংগঠন বাংলাদেশ ফিল্ম ক্লাবের নির্বাচনে জয়ী হলেন যারা

আমাদের চলচ্চিত্র ও ধ্বংসাত্মক মানসিক বিকৃতি

সালাহ উদ্দিন শোয়েব চৌধুরী
  • প্রকাশ সময়ঃ রবিবার, ৩১ জুলাই, ২০২২
  • ৩২৭ বার পড়া হয়েছে

বহু যুগ আগে পুরনো ঢাকায় একটা পতিতাপল্লী ছিলো। নাগরমহল সিনেমা হলের সামনে দিয়ে যাতায়াতের সময় চোখে পড়তো দেয়ালে দেয়ালে লাল ব্যাকগ্রাউন্ডে সাদা রঙ্গে লেখা “Out of bound” বা সীমানার বাইরে। সহজ করে বললে, নিষিদ্ধপল্লী। লোকজন ওই এলাকা এড়িয়ে চলতেন।

আমার আব্বা চলচ্চিত্র প্রযোজক ছিলেন। খুব ছোটবেলায় যখন শ্যুটিং দেখতে এফডিসিতে যেতাম তখন প্রযোজকদের প্রতি ইন্ডাস্ট্রির অন্যদের সম্মানের বিষয়টা খুব ভালো লাগতো। মনে হতো যেনো ওই এলাকার জমিদার। তখন কিন্তু ৩-৫ লাখ টাকায় সিনেমা হয়ে যেতো। মানে, আজকের হিসেবে কমপক্ষে ৩-৫ কোটি টাকারও বেশি। ওই সময়ে বছরে যতোগুলো সিনেমা নির্মিত হতো এর শতকরা ২৫ ভাগেরও কম ব্যবসা সফল হলেও ইন্ডাস্ট্রির একজনের মুখেও একটা নেতিবাচক শব্দ শুনিনি। বরং সবাইকে বলতে শুনতাম, ফিল্ম হচ্ছে Kingly বা রাজকীয় ব্যবসা। মানে, ওই ব্যবসায় যারা টাকা খাটাতেন ওনাদের মনটা ছিলো রাজার মতো।

আমাদের বাসায় ভিসিআর আসে ১৯৭৬ সালে। তখন ঢাকা শহরে ভিসিআর ছিলো কিনা জানিনা। প্রতি রবিবার ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই আমাদের বাসায় আসতেন ভিসিআর-এ হিন্দী সিনেমা দেখতে। তাদের মধ্যে ছিলেন আব্বার বন্ধু আতা চাচা (খান আতাউর রহমান), ড. আবু হেনা, আনোয়ার হোসেন (অভিনেতা), মুস্তফা চাচা (অভিনেতা গোলাম মোস্তফা), আজিম চাচা (অভিনেতা আজিম), অভিনেতা বুলবুল আহমেদ, আলমগীর কবির, জাহাঙ্গীর খান (মুভি মুগল), নায়ক রাজ রাজ্জাক, নারায়ণ চক্রবর্তি, শিল্পী জাফর ইকবাল প্রমুখ। ছোটবেলায় ফিল্মের ক্যান আর পোষ্টারের ঘ্রাণ ছিলো আমার প্রিয় সঙ্গী।

বড় হবার পর চলচ্চিত্র অঙ্গনের অনেকের সাথেই আমার বন্ধুত্ব হয়। তাঁদের মাঝে অন্যতম শেখ নেয়ামত আলী, আনোয়ার পারভেজ, চাষী নজরুল, আমজাদ হোসেন, আলাউদ্দিন আলী প্রমুখ। একালে এসে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির কারোকারো সাথে আমার মিত্রতা আছে। মিডিয়ায় আমার বিচরণ শুরু ১৯৯৫ সাল থেকেই। নিজের মনের গভীরে চলচ্চিত্র প্রযোজনার উস্কানিতে ২০০৯ সালে কাকরাইল এলাকায় ফিল্মের অফিসও খুলি। কিন্তু ফিল্ম বানানো হয়নি নানা কারণে। এর আগে ২০০৫ সালে বিজয় নগর এলাকায় আমাদের প্রতিষ্ঠান ক্রাউন মিউজিকের ঢাউস অফিস থাকা সত্বেও ফিল্ম বানানোর সাহস হয়নি।

এরপর ২০১৯ সাল থেকে নিকেতনে ক্রাউন এন্টারটেইনমেন্ট এর অফিসে শতশত নাটক নির্মিত হলেও ফিল্ম বানাইনি একটা কারণেই। আশেপাশের সবাই বলেছেন ফিল্মের অবস্থা ভালো না। কথাটা শুনলেই বুক ধক করে উঠতো। কারণ, একজন চলচ্চিত্র প্রযোজকের সন্তান হিসেবে আমি চাইনা বাংলাদেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি মরে যাক।

সম্প্রতি পরপর ক’টি সিনেমা সাফল্যের মুখ দেখার পর আবারও মনে আকাঙ্ক্ষা সিনেমা প্রযোজনার। আমার সহকর্মীদের বললাম, আমরাও সিনেমা প্রযোজনা করবো। ঠিক এমন সময়েই দেখছি সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাগুলো সম্পর্কে নেতিবাচক অপপ্রচার শুরু হয়ে গেছে। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির কেউকেউ ওসবে সুর মেলাচ্ছেন। বিনয়ের সাথে জানতে চাই, ওনারা আসলে কি চান? বাংলাদেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে যেনো আর কেউ বিনিয়োগ না করে? এই ইন্ডাস্ট্রি যেনো ধ্বংস হয়ে যায়? এখানে কর্মরত হাজার-হাজার মানুষ যেনো বেকার হয়ে বসে থাকেন?

আমার সহকর্মী তাজুলকে প্রশ্ন করলাম। আসলেই কি ফিল্ম চলেনা? সে বললো, একটা ফিল্ম যদি মাত্র এক সপ্তাহ হাউজফুল যায়, তাহলে টাকা উঠে আসে।

এই ঢাকা শহরে মানুষের সংখ্যা প্রায় আড়াই কোটি। সারাদেশে ১৭ কোটির মতো। এদের মধ্যে যদি ৪০-৫০ লাখ মানুষ সপ্তাহে একদিন সিনেমা দেখতে হলে যান তাহলে ফিল্মের বিনিয়োগ তো লাভসহ উঠে আসবে অনায়াসে। এজন্যে দরকার মানুষকে হলে যেতে, বাংলাদেশে নির্মিত সিনেমা দেখতে আগ্রহী করে তোলা। কিন্তু এর বিপরীতে দেখছি বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে কেন্দ্র করে ধ্বংসাত্মক মানসিক বিকৃতি। কারণ?

দয়া করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
March 2024
S M T W T F S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
2526272829