তৃতীয় ধাপে আগামী ৩০ জানুয়ারি রাজবাড়ীর পাংশা পৌরসভার নির্বাচন। এটা পাংশা পৌরসভার পঞ্চম নির্বাচন। নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা ততই তুঙ্গে উঠছে। পোস্টারিং ও প্রচার-প্রচারণায় সর্বত্রই নির্বাচনী আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে।
ঘন কুয়াশা ও প্রচন্ড শৈত প্রবাহের মধ্যে প্রার্থী, প্রার্থীদের নিকট আত্বীয়-স্বজন এবং কর্মী-সমর্থকরা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভোট প্রার্থনা করে ফিরচ্ছেন। এ নির্বাচনে বেকার যুবকদের কদর বেড়েছে। এর মধ্যে অনেকে ভোটারও না। পাংশা পৌর এলাকার চায়ের স্টল ও রেষ্টেুরেন্টে বেচা বিক্রিও বেড়েছে। পৌর এলাকার পাড়া-মহল্লা ও অফিস পাড়া ছাড়াও নির্বাচনী উত্তাপ ছড়িয়ে পরেছে পৌর এলাকার পাশের ইউনিয়নগুলোতেও।
এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী জগমার্কা প্রতীকের প্রার্থী যুবলীগের আহবায়ক ফজলুল হক ফরহাদ ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাবেক মেয়র ওয়াজেদ মন্ডলের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে পৌর এলাকার ভোটারদের অভিমত। তবে এই ২ প্রার্থীর মধ্যে য়ে প্রার্থীর বিজয় হোক তা হবে খুব সামান্য ভোটের ব্যবধানে। ইতিমধ্যে এই দুই প্রার্থী একে অপরকে নির্বাচনী আচরনবিধি ভঙ্গের দোষারোপ নির্বাচন কমিশনে অভিযোগও করছেন।
পাংশা পৌরসভার ভোটার সংখ্যা ২৪ হাজার ৩১৩। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১২ হাজার ১১৩ জন ও মহিলা ভোটার ১২ হাজার ২০০ জন। পুরুষের চেয়ে মহিলা ভোটার ৮৭ জন বেশি।
পাংশা পৌরসভার নির্বাচনে মেয়র পদে ৩জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থী সাবেক মেয়র মোঃ ওয়াজেদ আলী মন্ডল, স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের আহবায়ক মোঃ ফজলুল হক ফরহাদ (জগ) প্রতীকে এবং বিএনপি মনোনীত সাবেক পৌর কমিশনার রইচ উদ্দিন খান (ধানের শীষ) নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এছাড়া সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ১১জন ও সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ৪২ জন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
পৌরসভার বিভিন্ন শ্রেনি পেশার মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এবারে পাংশা পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও দুইবার নির্বাচিত সাবেক মেয়র ওয়াজেদ আলী নৌকা প্রতীক পেয়েছেন। এলাকায় তার জনপ্রিয়তা রয়েছে। তার সহোদর ফরিদ হোসেন ওদুত মন্ডল পাংশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। ওয়াজেদ মন্ডলের বৃহত পরিবারের সবাই পৌর এলাকায় প্রতিষ্ঠিত। তাদের বহু আত্বীয়-স্বজন রয়েছেন ভোটার।
অপরদিকে পাংশা উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক ফজলুল হক ফরহাদ মেয়র প্রার্থী হওয়ায় তরুণ ভোটারদের মাঝে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। ফজলুল হক ছাত্রজীবন থেকেই আওয়ামী ছাত্রলীগের সাথে জড়িত ছিলেন। পাংশা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ও পৌর ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপর দীর্ঘদিন ধরে তিনি উপজেলা যুবলীগের দায়িত্বে রয়েছেন। এখন কর্মজীবনে তিনি একজন ব্যবসায়ী। ফজলুল হক সাংবাদিকদের জানান,দীর্ঘ ২২বছরের আওয়ামী রাজনৈতিক জীবনে তার নামে কোন মামলা হয় নাই। তিনি সব সময় নির্ভেজাল ও স্বচ্ছ রাজনৈতিক ধারায় বিশ্বাসী। ফজলুল হক পাংশা পৌর এলাকার রেজিষ্ট্রি অফিস জামে মসজিদের সভাপতি। মাদক, সস্ত্রাস ও হীন রাজনৈতিক চক্রের বিরোধীতা করেছেন সব সময়ই। তাই ফরলুল হক ফরহাদ প্রথমবার এ ভোটে দাঁড়িয়েই পৌর এলাকার ভোটারদের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। অনেক ভোটার স্বর্স্ফুতভাবে তার জগমার্কা নির্বাচনী প্রচারনায় অংশ নিচ্ছেন। তাই ফজলুল হক ফরহাদ আসন্ন পাংশা পৌর নির্বাচনে বিজয়ের ব্যপারে ১০০ভাগ আশাবাদি।
আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ওয়াজেদ আলী মন্ডল ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ফজলুল হক ফরহাদের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ও শোডাউন বেশ চোখে পড়ার মতো। পথসভা ও উঠান বৈঠক করে তারা বিজয়ী হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করছেন। এক্ষেত্রে নৌকা প্রতীকের আওয়ামী লীগ ও জগ প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে রাজনৈতিক সচেতন মহলের লোকজন ধারণা করছেন।
পাংশার পৌর নির্বাচনে কেন্দ্র রয়েছে ৯টি।পাংশা থানার তথ্যে এরমধ্যে ৫টি কেন্দ্র রয়েছে ঝুঁকিপূনর্ কেন্দ্র। পাংশার ৯টি কেন্দ্র হলো- পাংশা শাহ জুঁই কামিল মাদরাসা, মৌকুড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাংশা পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, পাংশা সরকারি জর্জ উচ্চ বিদ্যালয়, ডা. আব্দুল কাদের বালিকা দাখিল মাদরাসা, পাংশা পৌরসভা কার্যালয়, কাজী আব্দুল মাজেদ একাডেমী, পাংশা জামিয়া আরাবিয়া কওমী মাদরাসা ও মৈশালা দারুল উলুম মোহাম্মাদিয়া দাখিল মাদরাসা।