যুব কার্যক্রমে কাজ করছিলেন বলেই ভবিষ্যতের দল গড়ার দিকে স্কালোনির মনোযোগ ছিল, সফলও হয়েছেন। তিনি বুঝেছিলেন, কেবল মেসির ওপর নির্ভর করে সাফল্য পাওয়া যাবে না। তাই লিয়ান্দ্রো পারেদেস, অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার, হুলিয়ান আলভারেজদের তিনি গড়ে তুলেছেন দারুণভাবে। সঙ্গে নিজেকে প্রমাণ করেছেন দারুণ এক ট্যাকটিশিয়ান হিসেবে।
এবারের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে একেক ম্যাচে একেক কৌশলে খেলিয়েছেন। কাল রাতে ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষেই যেমন রাইট উইঙ্গার আনহেল দি মারিয়াকে লেফট উইংয়ে খেলিয়ে প্রতিপক্ষের পরিকল্পনা এলোমেলো করে দিলেন। দি মারিয়াই যতক্ষণ মাঠে থাকলেন বাঁ দিক দিয়ে ফ্রান্সকে কী বেগটাই না দিলেন! বিশ্বকাপ ফাইনাল শুরু হতেই সেই ‘অখ্যাত’, ‘সাধারণ মানে’র কোচই কোচ, খেলোয়াড়, দুই পরিচয়েই বিশ্বকাপ জেতা ফরাসি কোচ দিদিয়ের দেশমকে বিরাট ব্যবধানে হারিয়ে দিলেন।
বিশ্বকাপ ইতিহাসের সর্বকালের সেরা ফাইনাল জিতেই আর্জেন্টিনা স্কালোনিকে অর্ঘ্য দিল। মেসি, দি মারিয়া, আলভারেজ, রদ্রিগো দি পল, এনজো ফার্নান্দেজরা কোচের কৌশলের সার্থক প্রতিফলন করে দেখালেন মাঠে।
নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ে ৩-৩ সমতার নাটকীয় ম্যাচে টাইব্রেকারে আর্জেন্টিনাকে ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ এনে দিলেন তাঁরা। স্কালোনি শুধু আর্জেন্টাইন ফুটবল ইতিহাসেই তৃতীয় বিশ্বকাপজয়ী হিসেবে স্থান করে নিলেন না, ঠাঁই করে নিয়েছেন লাতিন ফুটবল ইতিহাসেও। ব্রাজিলের মারিও জাগালো আর কার্লোস আলবার্তো পাহেইরার পর তিনি তৃতীয় লাতিন কোচ, যিনি কোপা জয়ের সঙ্গে বিশ্বকাপও জিতলেন।
কোপা জয়ের পর আর্জেন্টিনা দলের নাম ‘আল বিসেলেস্তে’ থেকে বদলে অনেকেই দিয়েছেন ‘লা স্কালোনেতা’, মানে স্কালোনির দল। কাতার বিশ্বকাপ জিতে আর্জেন্টিনা এখন শুধু মেসিরই দল নয়, আক্ষরিক অর্থেই স্কালোনিরও দল।