শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৪৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
নন্দিত গীতিকবি মিলন খানের আজ শুভ জন্মদিন ভালোবাসি তোমায় সিনেমার ক্যামেরা ক্লোজ চৌদ্দগ্রাম প্রেসক্লাবের নতুন কমিটি গঠন তৌহিদ সভাপতি, সম্পাদক সোহাগ, সাংগঠনিক ফারুক গানের হাট অডিও স্টুডিও এর শুভ উদ্বোধন হলো চলচ্চিত্রে অনুদানের অজুহাতে রাষ্ট্রীয় অর্থের হরিলুট: সালাহ্ উদ্দিন শোয়েব চৌধুরী গান বাজনা সম্পর্কে কিছু কথা প্রসঙ্গ শুভ্র দেবের একুশে পদকঃ ফরিদুল আলম ফরিদ শেখ কামাল হোসেন এর কথা ও সুরে, চম্পা বণিক এর গাওয়া ‘একুশ মানে’ শিরোনামের গানটি আজ রিলিজ হলো নোয়াখালীতে প্রসূতিসহ নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় সাংবাদিকের মামলা, তদন্তে পিবিআই ‘দম’ সিনেমা নিয়ে ফিরছেন পরিচালক রেদওয়ান রনি

সজনদের সাথে ঈদ করতে ঘরমুখো মানুষের ঢল

জ.নি. ডেস্কঃ
  • প্রকাশ সময়ঃ বৃহস্পতিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২২
  • ৩২০ বার পড়া হয়েছে

সরকারি অফিস, আদালত ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বৃহস্পতিবার ছিল শেষ কর্মদিবস। অফিস শেষে টানা ছয় দিনের ছুটি শুরু হয়েছে। এর মধ্যে আজ ও কাল সাপ্তাহিক ছুটি। রোববার মহান মে দিবস। এর সঙ্গে শুরু হচ্ছে ঈদের ছুটি। আগামী বুধবার পর্যন্ত এ ছুটি চলবে। যারা আগামী বৃহস্পতিবার ছুটি ম্যানেজ করতে পেরেছেন তারা নয় দিনের ছুটিতে যাচ্ছেন।

শেষ কার্যদিবসের পরপরই ঈদ আনন্দে বাড়ি যাওয়ার হিড়িক পড়ে। রাজধানীর গাবতলী, মহাখালী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল এবং ঢাকা নদীবন্দরে (সদরঘাট) যাত্রীদের ভিড় কম ছিল। তবে বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যাত্রীদের ভিড় বাড়তে থাকে। গভীর রাতে টার্মিনালগুলো মানুষের ঢল নামে। বাস ও লঞ্চে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।

অনেককে বাসের বিকল্প হিসাবে ট্রাকেও যেতে দেখা গেছে। তবে আজ শুক্র ও কাল শনিবার যাত্রী ঢল আরও তীব্র হবে বলে ধারণা করছেন পরিবহণ সংশ্লিষ্টরা। বৃহস্পতিবার কমলাপুর রেলস্টেশনসহ সব স্টেশনে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় ছিল।

সদরঘাট ঘুরে দেখা গেছে, সন্ধ্যার পর থেকে সদরঘাটে যাত্রীদের ঢল নামে। লঞ্চের ভেতরে যেন হাটার জায়গা নেই। যাত্রীদের অভিযোগ, ঈদ সামনে রেখে আগের চেয়ে বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। শ্রেণি ভেদে ভাড়া ৫০ থেকে ৩০০ টাকা বেড়েছে।

সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ, পরিবহণ সংশ্লিষ্ট ও যাত্রীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, এবার ঈদে উত্তরবঙ্গ, সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের রুটগুলোতে সড়কপথে গাড়ির চাপ থাকলেও উল্লেখযোগ্য যানজট তৈরি হয়নি। ফলে অনেকটা স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছেন যাত্রীরা। বাস নির্দিষ্ট গন্তব্যে গিয়ে যাত্রী নামিয়ে আবার ঢাকায় ফিরে আসতে পারছে। তবে বিপত্তি হচ্ছে দক্ষিণবঙ্গের রুটে। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরি পার হতে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগছে। শিমুলিয়া থেকে বাংলাবাজার ও মাঝিরকান্দি ফেরি রুটে শুধু ছোট ও মাঝারি আকারের গাড়ি পার করায় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুটে গাড়ির চাপ বেশি রয়েছে।

এ রুটে ২১টি ফেরিতে গাড়ি পার করা হচ্ছে। অপর দিকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের রুটগুলোতে ৭১টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে।

বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম-পরিচালক শেখ মো. সেলিম রেজা বলেন, পর্যাপ্ত লঞ্চ রয়েছে। শিল্প-কারখানা বন্ধের পর মূলত যাত্রী চাপ অনেক বেড়ে যাবে। ওই চাপ মোকাবিলা করতে লঞ্চের অতিরিক্ত ট্রিপের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওভারলোডিং ও বাড়তি ভাড়া যাতে আদায় না করতে পারে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন।

বৃহস্পতিবার গাবতলী বাসস্ট্যান্ড ঘুরে দেখা গেছে, সন্ধ্যা থেকে ঘরে ফেরা মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। যাত্রী কম থাকায় সারা দিন এক ধরনের হতাশার সুর ছিল পরিবহণ সংশ্লিষ্টদের মধ্যে। দারুসসালাম থেকে গাবতলী ভেড়িবাঁধ পর্যন্ত মাঝেমধ্যেই যানজট থাকলেও বাস স্টেশনের ভেতরে ছিল প্রায় ফাঁকা। সন্ধ্যার পর থেকে যাত্রীদের চাপ বাড়তে থাকে। সাউদিয়া পরিবহণের ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ জানান, ঢাকা-ফরিদপুর-বরিশাল-ঝালকাঠি রুটে চলে তাদের কোম্পানির বাস। এ ছাড়া কুষ্টিয়া রুটেও গাড়ি চলে।

সাধারণত সকাল থেকে বেলা ৩টার মধ্যে ৫-৭টি গাড়ি ঢাকা ছেড়ে যায়। কিন্তু বৃহস্পতিবার যাত্রীর অভাবে মাত্র একটি বাস ছাড়া হয়। তিনি বলেন, যাত্রীরা লোকাল গাড়িতে ভেঙে ভেঙে যাচ্ছেন। এ ছাড়া ব্যক্তিগত গাড়ি, মাইক্রো বাস, মোটরসাইকেল যে যা পারছেন তাতেই ছুটছেন গ্রামের দিকে। এ ছাড়া মাওয়া হয়ে অনেক যাত্রী চলে যাচ্ছেন। বাকিরা গাবতলী হয়ে যাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, সন্ধ্যার পর থেকে যাত্রী বেড়েছে। এখন গাড়ি ছাড়তে শুরু করেছে। মাগুরার যাত্রী সরকারি চাকরিজীবী রাফিক জানান, টিকিট পেতে কোনো সমস্যা হয়নি।

তবে টিকিটের দাম বেশি নেওয়া হয়েছে। ৫০০ টাকার জায়গায় ৭০০ টাকা নেওয়া হয়েছে। মহাখালী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে সকালের দিকে ঘরমুখো মানুষের চাপ থাকলেও দুপুরে তা ছিল না। আবার সন্ধ্যার পর উপচেপড়া ভিড় দেখা যায়। এ টার্মিনালে তাৎক্ষণিকভাবে টিকিট সংগ্রহ করতে পেরেছেন যাত্রীরা। তবে এর জন্য অতিরিক্ত টাকা গুনতে হয়েছে।

এদিকে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে যাত্রী সাধারণের যাত্রা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে বিআরটিএ, পুলিশ বিভাগ, সিটি করপোরেশন এবং পরিবহণ মালিক, শ্রমিক ইউনিয়নের সমন্বয়ে ‘ভিজিলেন্স টিম’ গঠন করা হয়েছে। এর সদস্যরা সব সময় টার্মিনালে অবস্থান করছেন।

এ ছাড়া র‌্যাব-২ এর কন্ট্রোল রুমও রয়েছে। ভিজিলেন্স টিমের সদস্য বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) সহকারী পরিচালক উথোয়াইনু চৌধুরী জানান, বাড়তি ভাড়া নেওয়া বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। বাড়তি ভাড়া যাতে না নিতে পারে, বাসে সিটের বেশি যাতে যাত্রী না নেওয়া হয়, স্বাস্থ্যবিধি ও যাত্রীদের নির্বিঘ্নে গন্তব্যে পৌঁছানোর বিষয়গুলো তদারকি করছি আমরা। এখানে সব কিছুই ঠিক আছে।

শিডিউল বিপর্যয়ে ট্রেনযাত্রীদের দুর্ভোগ : ঈদযাত্রার দ্বিতীয় দিনও শিডিউল বিপর্যয়ে পড়েছে বিভিন্ন রুটের ট্রেন। এতে চরম বিপাকে পড়ছেন ঘরমুখো যাত্রীরা। ঢাকা থেকে গড়ে একেকটি ট্রেন ৩০ মিনিট থেকে ২ ঘণ্টা বিলম্বে চলাচল করছে। শুধু ঢাকা থেকে বিলম্বে ছাড়া নয়-রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা, রংপুর, সিলেট স্টেশনে বিলম্বে ট্রেন পৌঁছাচ্ছে-ছাড়ছে। তবে রেল কর্তৃপক্ষের দাবি, একেকটি ট্রেনে আসন সংখ্যার বিপরীতে দ্বিগুণ, তিনগুণ পর্যন্ত যাত্রী উঠছে। এ ছাড়া যেসব স্টেশনে যাত্রাবিরতি ছিল দুই মিনিট, সেখানে ১০ থেকে ১২ মিনিট পর্যন্ত বিরতি দিতে হচ্ছে। যাত্রী ওঠা-নামায় বেশি সময় নিচ্ছে।

ঢাকা রেলওয়ে বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা শওকত জামান মোহসীন জানান, পশ্চিমাঞ্চলে কিছু ট্রেন বিলম্বে চলাচল করছে। একে শিডিউল বিপর্যয় বলা যাবে না। আমরা যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই বিরতির সময় বাড়িয়ে দিচ্ছি। এ ছাড়া ঈদযাত্রায় ট্রেনের ওপর অতিরিক্ত চাপ থাকে। ফলে যথাযথ গতি নিয়ে ট্রেন চালানোও সম্ভব নয়। সবই যাত্রীদের কল্যাণে করা হচ্ছে। ঈদে মোট ৩৭টি আন্তঃনগর ট্রেন কমলাপুর থেকে ছেড়ে যাচ্ছে। শুক্রবার থেকে আরও দুটি স্পেশাল ট্রেন যুক্ত হবে। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, স্টেশনে যাত্রীদের ভিড় বাড়ছে।

প্লাটফর্মে ১০-১২ ট্রেনের যাত্রী একত্রিত হচ্ছেন। ট্রেন চলাচলে যাতে বিলম্ব না হয় সেজন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। দ্বিতীয় দিন শিডিউল বিপর্যয়ের কারণ সম্পর্কে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, টঙ্গি স্টেশন আউটারে মালবাহী ট্রেন দুর্ঘটনার কারণে ঢাকামুখী ট্রেনগুলো সময়মতো গন্তব্যে আসতে পারেনি। রেলে যেসব ট্রেন বিলম্বে চলাচল করে সেগুলো শিডিউল অনুযায়ী চালাতে ২-৩ দিন সময় লাগে।

এদিকে, ঈদযাত্রা কেন্দ করে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে যানবাহনের চাপ আরও বেড়েছে। তবে বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত কোথাও যানজট হয়নি। মঙ্গলবার থেকে বুধবার রাত ১২টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে ২৫ হাজার ৪৫০টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকার দিকে ১২ হাজার ৮৯৭টি যানবাহন গেছে। ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গের দিকে গেছে ১২ হাজার ৫৫৩টি যানবাহন। এর আগে ২৪ ঘণ্টায় যানবাহন পারাপার হয়েছিল ২৩ হাজার ৬১১টি। স্বাভাবিক অবস্থায় এ সেতু দিয়ে প্রতিদিন ১২ থেকে ১৩ হাজার যানবাহন পারাপার হয়।

সূত্রঃ দৈনিক যুগান্তর

দয়া করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
April 2024
S M T W T F S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031