বাংলাদেশের কোনো নির্মাতা এর আগে তাইওয়ান সরকারের এই ফান্ড পাননি। গল্পের মধ্যে কোনো সম্ভাবনা দেখলেই তরুণ নির্মাতাদের এই ফান্ড দেয় তাইওয়ান সরকার। তবে একটাই শর্ত, ছবিতে তাইওয়ানের প্রযোজক থাকতে হবে। মুভিং বাংলাদেশ ছাড়াও এই বছর এই ফান্ড পাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেমা বি উইথ মি, ফ্রান্সের ফর দ্য কান্ট্রি, মালয়েশিয়ার স্নো ইন দ্য মিডসামার এবং নেপাল, ফ্রান্স, তুরস্ক ও নরওয়ের আ ইয়ার অব কোল্ড।
নুহাশের সঙ্গে কথা বলে বোঝা গেল, সিনেমাটি নিয়ে এখন তিনি অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী। এই নির্মাতা বলেন, ‘আমার আগের কাজ, এই সিনেমার চিত্রনাট্য দেখে ফান্ড ও নির্মাণের সব সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছি। গ্লোবাল মার্কেটের এই অভিজ্ঞতা আমার কাছে খুবই ইন্টারেস্টিং মনে হয়েছে, দেশ থেকে টাকা না পেলেও বিদেশের টাকা দিয়ে বাংলা সিনেমা বানানো যাচ্ছে।’
বাংলাদেশ ছাড়াও মুভিং বাংলাদেশ–এ ইতিমধ্যে যুক্ত হয়েছেন ফ্রান্স ও তাইওয়ানের প্রযোজক। ছবিটির অগ্রগতি বিষয়ে নুহাশ বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে শিল্পী নির্বাচন করছি। নতুন মুখ নিয়ে কাজটি করতে চাই। আগামী বছর এই প্রজেক্টের শুটিং শুরু করব।’ স্টার্টআপ নিয়ে এটি দেশের প্রথম সিনেমা। একটি মোটরসাইকেল রাইড অ্যাপে কাজ করা বাংলাদেশের এক মধ্যবিত্ত বাইকচালকের গল্প নিয়েই মুভিং বাংলাদেশ।
অনেক নির্মাতাই লগ্নিকারক খুঁজে পান না। বাজেট পাওয়া নিয়েও অনেকে অভিযোগ থাকে। সেই পথ থেকে বের হয়ে তরুণদের এশিয়া–ইউরোপে ফান্ড পাওয়ার বড় সুযোগ রয়েছে। বাইরের এই সুযোগগুলো নেওয়া উচিত বলে মনে করেন নুহাশ। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছিল, গল্প ভালো হলে দেশ হোক, বিদেশ হোক, ফান্ড আসবেই। এক বছর ধরে কষ্ট করে আমি যে সিনেমা বানানোর জন্য টাকা পাচ্ছি, সেটাই আমার কাছে অনেক। অনুদানের এই প্রক্রিয়া আমাকে নির্মাণে আশাবাদী করছে।’
সিনেমাটির প্রযোজক আরিফুর রহমান বলেন, ‘বিগত দুই বছর আমরা বিশ্বের বিভিন্ন মার্কেটে পিচ করেছি, প্রথম ফান্ড কবে আসবে, সেটার অপেক্ষাতেই ছিলাম এত দিন। সিনেমা নির্মাণের মোড়টা এবার ঘুরে গেল, এখন আর লগ্নিকারক পেতে সমস্যা হবে না। আর আমাদের পেছন ফিরে তাকানোর সময় নেই; আমাদের আত্মবিশ্বাস এখন তুঙ্গে, তাইওয়ানের তাইপে ফিল্ম ফান্ড পাওয়ার পরপর আমরা আরও একটি গ্রান্ট জিতে নিয়েছি, যা শিগগিরই সবাই জানতে পারবে। ২০ বছর ধরে বাংলাদেশ থেকে যে গল্পগুলো বৈশ্বিক দর্শকের কাছে যাচ্ছে, সে যাত্রায় মুভিং বাংলাদেশ এক অনন্য সংযোজন। আমার বিশ্বাস, এই ছবির মধ্যে দিয়ে বিশ্ববাসী এক নতুন বাংলাদেশকে চিনবেন।’