সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০:২০ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
মানিকগঞ্জে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য লাঠি খেলা অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ডিজিটাল মিডিয়া ক্লাব আয়োজিত প্রশান্তির মিলনমেলা সফলভাবে শেষ হলো পাংশা-কালুখালী উপজেলা সমিতির বার্ষিক বনভোজন ও মিলনমেলা অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ডিজিটাল মিডিয়া ক্লাব এর প্রশান্তির মিলনমেলা অল ব্রডকাস্টার্স কমিউনিটি (এবিসি)’র ফ্যামিলি ডে-২০২৫ অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ ফিল্ম ক্লাব লিঃ’ নির্বাচনের ফল প্রকাশ জনতার নিঃশ্বাস পরিবার আলিফ নয়, আগামীকাল বালাকের সাথে অনন্যার বিয়ে ১৬ই ডিসেম্বর থেকে প্রো অ্যাকটিভ হাসপাতালে চালু হয়েছে প্রো অ্যাকটিভ ক্যান্সার সেন্টার খুলনা সমিতি ঢাকার সভাপতি এম এ সালাম ও সাধারণ সম্পাদক খান রবিউল ইসলাম বিনা প্রতিদ্বন্ধীতায় নির্বাচিত

রাণীশংকৈলে ৪৫ হাজার বস্তায় আদা চাষে ৩ কৃষকের ব্যাপক সফলতা

হুমায়ুন কবির
  • প্রকাশ সময়ঃ মঙ্গলবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৪
  • ৬৩ বার পড়া হয়েছে

হুমায়ুন কবির, রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধিঃ সর্ব উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় একটি কথা প্রচলন আছে- “আদা চাষ করে কোন গাধা”। কিন্তু এই প্রবাদকে তিন জন প্রান্তিক কৃষক ভুল প্রমানিত করে ৪৫ হাজার বস্তায় আদা চাষে রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন। মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, স্বল্প পরিশ্রম ও অল্প পুঁজি বিনিয়োগ করেই অধিক লাভবান হচ্ছেন বস্তায় আদা চাষ করা ওই তিন প্রান্তিক আদাচাষি। আধুনিকতার ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে কৃষিখাত। নেট দুনিয়ার বদৌলতে এখন গ্রাম-বাংলার প্রান্তিক কৃষকও গুগল সার্চ করে নতুন নতুন চাষ পদ্ধতি নিয়ে সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছতে পেরেছেন। তাইতো উপজেলার দুলাল হোসেন, ওসমান গনি ও আহসান হাবীব বানিজ্যিকভাবে ৪৫ হাজার বস্তায় আদা চাষ করে বেশ চমক সৃষ্টি করেছেন। তাদের এই সফলতা দেখে বস্তায় আদা চাষে উপজেলার আরো অনেক কৃষক উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। বস্তায় আদা চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে ওই তিন সফল কৃষক জানান, একটি বস্তায় তিন ঝুড়ি মাটি, এক ঝুড়ি বালি, এক ঝুড়ি পচা গোবর সার ও ২৫ গ্রাম ফিউরাডন লাগবে। বালি, পানি নিষ্কাশনে সাহায্য করে, ফিউরাডন, উইপোকার উপদ্রব থেকে রক্ষা করে। মাটির সঙ্গে গোবর, বালি ও ফিউরাডন ভালোভাবে মিশিয়ে সিমেন্টের বস্তায় ভরে ঝাঁকিয়ে নিন তাতে মিশ্রনটি ভালোভাবে চেপে যাবে। আলাদা একটি বালি ভর্তি টবে তিন টুকরো অঙ্কুরিত আদা পুঁতে দিন। ২০-২৫ দিন পর ওই আদা থেকে গাছ বের হবে। তখন আদার চারা সাবধানে তুলে প্রতিটি বস্তার মুখে তিন জায়গায় বসিয়ে দিন। দিনের অধিকাংশ সময় রোদ পায় এমন স্থানে বস্তাটি রাখতে হবে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আদা গাছ বাড়তে থাকবে। চারা লাগানোর দু’মাস পরে পরিমাণ মতো বস্তার মাটিতে খৈল এবং ইউরিয়া প্রয়োগ করতে হয়। বস্তার মাঝের মাটিটা খুঁড়ে একটু আলগা করে দিতে হয় এবং আদার কন্দ লাগানোর আগে ব্যাভিস্টিন দিয়ে শোধন করে নিলে ভালো হয়। এতে ছত্রাকের আক্রমণ থেকে বাঁচবে। চাইলে অন্য কোনো ছত্রাকনাশকও ব্যবহার করা যায়। শোধনের পর আধা ঘণ্টা ছায়ায় শুকিয়ে নিতে হবে। আদা জুন-জুলাই মাসে লাগালে ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে তোলার উপযুক্ত হয়ে যায়। এক একটি বস্তায় তিনটি গাছ থেকে এক থেকে দেড় কেজি পর্যন্ত আদার ফলন পাওয়া সম্ভব।

তাইতো প্রান্তিক এসব কৃষকেরা আধুনিক পদ্ধতিকে কাজে লাগিয়ে আদা চাষ করে লাভবান হওয়ার প্রত্যাশার প্রহর গুণছেন। মসলা এবং ভেষজ ঔষধ হিসেবে সারাদেশে আদার ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। বর্তমান বাজারে এর দামও বেশ চড়া। তাই পরিবারের প্রয়োজন মেটাতে এবং বানিজ্যিকভাবে বাড়তি আয়ের আশায় বস্তায় আদা চাষ শুরু করেছেন বলেও তারা জানান। রাণীশংকৈল কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ভাংবাড়ী, ভন্ডগ্রাম কাউন্সিল বাজার এলাকাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে শুধুমাত্র তিন জন কৃষক চলতি মৌসুমে প্রায় ৪৫ হাজার বস্তায় আদা চাষ করে ব্যাপক সাড়া জুগিয়ে ফেলেছেন। এছাড়াও উপজেলার আরো অনেক কৃষক স্বল্প পরিমাণে নিজে খাওয়ার জন্য আদা চাষ করেছেন। উপজেলার গাজিরহাট ভন্ডগ্রাম এলাকার কৃষক দুলাল হোসেন জানান, গত বছর পরীক্ষা মূলকভাবে দু’শ বস্তায় আদা চাষ করেছিলাম ফলাফল লাভজনক হওয়ায় এবছর বানিজ্যিকভাবে আট হাজার বস্তা আদা চাষ করেছি, আশা করছি প্রতি বস্তায় দেড় কেজি হারে প্রায় আট হাজার কেজি আদা পাবো, যা চলতি দর অনুযায়ী তেরো থেকে ষোল লাখ টাকায় বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ভাংবাড়ি গ্রামের কৃষক ওসমান গনি বলেন, গত বছর ভালো লাভ পেয়েছি, এবছর বানিজ্যিক ভাবে বত্রিশ হাজার বস্তায় আদা চাষ করেছি, অবসর সময়ে নিজেই পরিচর্যা করি। রোগ-বালাইয়ের আক্রমনও কম। বাড়ির আশপাশের পরিত্যক্ত, ছায়াযুক্ত যুক্ত জায়গা কাজে লাগিয়ে বাড়তি আয়ের চেষ্টা করছি।

এবারও সন্তোষজনক লাভ হবে বলে আশা করছি। এবং ধর্মগড় কাউন্সিল বাজার এলাকার কৃষক আহসান হাবীব জানান, বস্তায় আদা চাষে আলাদা জমির প্রয়োজন হয় না, আম বাগানে পাঁচ হাজার বস্তায় আদা চাষ করেছি, ভবিষ্যতে আদা চাষের পরিধি তিন গুন বাড়াবো এবং এবছর ভালো লাভবান হবো ইনশাল্লাহ। রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সহীদুল ইসলাম বলেন,”এ বছর উপজেলায় ৪৫ হাজারের উপর বস্তায়  আদা চাষ হয়েছে, গত বছর দু’হাজার বস্তায় হয়েছিল। অনাবাদি পতিত জায়গায় ও ফল বাগানে সাথী ফসল হিসেবে এ আদা চাষ হয়েছে। আদা একটি উচ্চ মূল্যের ফসল যা আমাদের আমদানি করতে হয়। অন্য দেশের ওপর আমদানি নির্ভরশীলতা কমানো এবং দেশের স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে এটি বানিজ্যিকভাবে চাষ হলে আমদানি নির্ভরতা কমাসহ দেশীয় মুদ্রা সাশ্রয় করা সম্ভব।আমরা উপজেলার আদা চাষিদের সার্বক্ষণিক সু-পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। এবং আদা চাষে আরো অনেক কৃষককে উদ্বুদ্ধ করছি”।

দয়া করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই বিভাগের আরো খবর
February 2025
S M T W T F S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
© All rights reserved © 2023 Janatarnissash
Theme Dwonload From