গতকাল গিয়েছিলাম “দিন দ্যা ডে” সিনেমা দেখতে, হলে ঢুকেই ভীষণ ভালো লাগলো, পুরো হল সিনেমাপ্রেমীতে পরিপূর্ন। আমাদের দেশে মানস্মমত প্রয়োজনীয় সংখ্যক সিনেমা হল নাই। সিনেমা নির্মাণের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমেও যাচ্ছে, যে এক/দুই জন অর্থ বিনিয়োগ করে রিস্ক নিয়ে সিনেমা বানাচ্ছে, তাদের নিয়ে আমরা আবার অহেতুক সমালোচনা করছি।অনেক ধরনের সিনেমা হবে,দল বেঁধে সবাই বাংলা সিনেমা দেখতে যাবে, সেটাইতো হবে প্রত্যাশিত। সকল শিল্পী/ডিরেক্টর/ প্রোডিউসার /সিনেমা হল মালিকগণের জন্য তো বটেই।
সিনেমা হলে দর্শক বেশী হলেই তো অধিক সিনেমা তৈরি হবে। আমরা আরো বেশী বেশী মানসম্মত সিনেমা দেখতে পারবো। সেই ইতিবাচক চিন্তাভাবনা আমরা কেউ করিনা। একা আমিই সেরা থাকবো এবং প্রতিটা মুভিতে আমাকেই নিবে আর কাউকে নেয়া যাবে না…. এই চিন্তাটা মাথা থেকে ছেড়ে ফেলা উচিত। যেমন আমাদের ফিল্ম ইন্ড্রাস্ট্রির একজন নায়ক একা রাজত্ব করতে গিয়ে মনোপলী চেতনা পোষণ করার কারণে বাংলা সিনেমার বারোটা বাজিয়েছে, এতে করে চলচ্চিত্রের বাজারে দর্শক আর অন্য কোন হিরো কে দেখতে পাচ্ছিলো না এবং কম্পেয়ার করতেও পারছিলোনা, যার ফলে আস্তে আস্তে করে সিনেমার সংখ্যা আশংকাজনক হারে কমে গেলো এবং হলগুলোও বেশীরভাগ বন্ধ হয়ে গেল। সব ক্ষেত্রেই কম্পিটিশান থাকতে হবে, তাহলেই কাজের মজা পাওয়া যাবে এবং এতে ভালো কিছু করার অগ্রহও বেড়ে যাবে। খেয়াল করবেন, কোথাও একটা নামকরা স্বর্নের দোকান আছে, বেশীরভাগ ক্রেতা চায় সেই দোকানে যেতে। অথচ তার আশেপাশে আর কোন স্বর্ণের দোকান না থাকায় অন্য যাচাই করা সম্ভব হচ্ছে না। থাকলে যাচাই-বাছাই করে বেটার কোয়ালিটি প্রোডাক্ট পেতেও পারতো।
সবার আগে সিনেমার গ্রাহক- দর্শকের কথা ভাবতে হবে, আসলে তারা কি ধরনের সিনেমা পছন্দ করে ? কোন শ্রেনীর দর্শক বেশী, চারদিকে দুঃখ, হতাশা, অসুস্থ প্রতিযোগিতা, যানজটে অস্থির, হাতে হাতে সবার গ্যাজেট —সব কিছুর পর মানুষ একটু আনন্দ পেতে চায়, নির্মল বিনোদন পেতে চায়, একটু হাসতে চায়। শুধু বাইরের দেশে এ্যাওয়ার্ডের কথা চিন্তা করে কি সিনেমা বানাতে হবে? নাকি, দেশের সংস্কৃতি এবং শিল্পমান বজায় রেখে আমাদের দেশের দর্শকের কথাও ভাবতে হবে??
সকল দর্শকের কথা চিন্তা করে সব ধরণের সিনেমা বানাতে হবে এবং তাতে আমাদের পুরো ইন্ড্রাস্ট্রির সহযোগিতা থাকতে হবে, তাদের পাশে থাকতে হবে। ছবিতে যদি একটা হ্নদয়গ্রাহী গল্প থাকে, তাহলে দর্শক দেখবেই। দর্শক হচ্ছে আমাদের সিনেমার প্রাণ তারা কি পছন্দ করে সেটা ভাবতে হবে।
দিন দ্যা ডে বড় বাজেটের ছবি, অ্যাকশন আছে, লোকেশন ভালো, গল্পে একটা ম্যাসেজ আছে সব মিলিয়ে খারাপ লাগে নাই, তারা ভালো করার জন্য যথেষ্ট চেষ্টা করেছে। চেষ্টা যদি থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের ছবি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনা হবে। মোট কথা সবাই কে উৎসাহিত করতে হবে। “দিন দ্যা ডে” দেখুন সবাই।আশা করি ভালো লাগবে। বাংলা সিনেমার জয় হোক…হলে গিয়ে দর্শক বাংলা সিনেমা দেখুক। আশা করি বাংলা সিনেমার সুদিন আবার ফিরবে….
রিভিউ লেখকঃ তানভিন সুইটি (অভিনেত্রী)
সূত্রঃ তানভিন সুইটির ফেসবুক পোস্ট থেকে সংগৃহীত।