বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৪:০৭ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
ভালোবাসি তোমায় সিনেমার ক্যামেরা ক্লোজ চৌদ্দগ্রাম প্রেসক্লাবের নতুন কমিটি গঠন তৌহিদ সভাপতি, সম্পাদক সোহাগ, সাংগঠনিক ফারুক গানের হাট অডিও স্টুডিও এর শুভ উদ্বোধন হলো চলচ্চিত্রে অনুদানের অজুহাতে রাষ্ট্রীয় অর্থের হরিলুট: সালাহ্ উদ্দিন শোয়েব চৌধুরী গান বাজনা সম্পর্কে কিছু কথা প্রসঙ্গ শুভ্র দেবের একুশে পদকঃ ফরিদুল আলম ফরিদ শেখ কামাল হোসেন এর কথা ও সুরে, চম্পা বণিক এর গাওয়া ‘একুশ মানে’ শিরোনামের গানটি আজ রিলিজ হলো নোয়াখালীতে প্রসূতিসহ নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় সাংবাদিকের মামলা, তদন্তে পিবিআই ‘দম’ সিনেমা নিয়ে ফিরছেন পরিচালক রেদওয়ান রনি চলচ্চিত্র শিল্প সংশ্লিষ্টদের সংগঠন বাংলাদেশ ফিল্ম ক্লাবের নির্বাচনে জয়ী হলেন যারা

টাকা ঢাললেই সিনেমা হিট হয়নাঃ সালাহ্ উদ্দিন শোয়েব চৌধুরী

সালাহ্ উদ্দিন শোয়েব চৌধুরী
  • প্রকাশ সময়ঃ সোমবার, ৮ আগস্ট, ২০২২
  • ২৫০ বার পড়া হয়েছে
প্রায় মুখ থুবড়ে পড়া দেশীয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি যেনো নতুন জীবন লাভ করলো। পরপর মুক্তিপ্রাপ্ত দুটো চলচ্চিত্র দেখার জন্যে দর্শকদের ভিড়। বহু বছর পর আবারও সিনেমাহল কিংবা সিনেপ্লেক্সগুলোর সামনে ঝকঝক করছে হাউজফুল বোর্ড। যারা বাংলাদেশী চলচ্চিত্রকে ভালোবাসেন তাঁরা সবাই এটা দেখে উচ্ছসিত। পাশাপাশি বিদ্যমান এবং সম্ভাব্য প্রযোজকদের মাঝেও দেখা দিয়েছে নতুন উদ্দীপনা।
সফল দুই চলচ্চিত্রের বাজেট নিয়ে যে-যার মতো সংখ্যা লিখছেন। কেউ বলছেন আশি লাখ, কেউ কোটির ওপরে। আমরা যারা বিনোদন জগতের খোঁজখবর রাখি, নির্মাণ ব্যয় বুঝি, তাদের অজানা নয় আসল বিনিয়োগের সংখ্যাটা। যাক, এটা নিয়ে বিস্তারিত না বলি।
সফল দুই চলচ্চিত্রের বড় বৈশিষ্ট্য হলো এগুলোয় কথিত সুপার ষ্টারেরা নেই বা এগুলো সুপার ষ্টার নির্ভর নয়। এগুলোর মূল পুঁজি গল্প, নির্মাণ শৈলী, অভিনয় এবং লোকেশন। আরেকটা বৈশিষ্ট্য হলো গান।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে যখন ভালো সময় চলছিলো, আজ থেকে প্রায় দেড় যুগ আগে, তখন হঠাৎ করেই আবির্ভূত হয় চলচ্চিত্রের নামে অসভ্যতা। পাশাপশি যোগ হয় নকল কিংবা ভীষন সস্তা গান। ক্ষণিকের জন্যে ওগুলো ব্যবসা সফল হলেও আদতে ওই সিনেমাগুলোই গোটা ইন্ডাষ্ট্রির চরম সর্বনাশ করেছে। যার খেসারত দিয়েছে বাংলাদেশের ফিল্ম ইন্ডাষ্ট্রি বছরের পর বছর।
এখানে একটা কথা না বললেই নয়। মাত্র দশ বছর আগেও সিনেমা বলতে বোঝানো হতো ৩৫ মিলিমিটার ক্যামেরায় নির্মিতগুলোকে। বাকী সব নাটকের তকমা জুড়ে দেয়া হতো। সমালোচকেরা বলতেন, ৩৫ মিলিমিটার ক্যামেরা ছাড়া সিনেমা হয়না। কারণ, নাটকের ক্যামেরায় ওয়াইডনেস নেই। কথাটা সত্যি ছিলো রেড ড্রাগন কিংবা সমপর্যায়ে ক্যামেরা বাজারে আসার আগে। এখন ৩৫ মিলিমিটার ক্যামেরার চাইতেও ফিচার অনেক বেশী ডিজিট্যাল ক্যামেরাগুলোয়। পাশাপাশি, এসব ক্যামেরায় ধারণ করা ছবির রেজ্যুলেশন কিংবা গ্রেইন পোষ্ট প্রোডাকশনে সামান্য নষ্ট হয়না। বরং আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়ায় এগুলো হয়ে ওঠে আরো ঝকঝকে। পাশাপাশি ডলবি ডিটিএস সাউন্ড।
সিনেমা যখন ৩৫ মিলিমিটার ক্যামেরায় নির্মিত হতো তখন নেগেটিভ ফিল্মের যে খরচ ছিলো কিংবা প্রত্যেকটা প্রিন্ট তৈরীর যে খরচ ছিলো সেটা এখন আর নেই। এক-একটা প্রিন্ট তৈরী করতেই খরচ পড়ে যেতো প্রায় লাখ টাকা। অর্থাৎ, একটা সিনেমা ১৫ টা হলে রিলিজ দিতে হলেও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানকে গুনতে হতো পনেরো লাখ টাকার মতো। এবার ওই ৩৫ মিলিমিটারে নির্মিত সিনেমা চালানো হতো এনালগ প্রজেক্টরে। মানে, ছবির মান কিংবা শব্দ অনেকাংশেই ক্ষয়ে যেতো। এখন বাংলাদেশে ডিজিট্যাল সিনেমাগুলো চলছে ২-৪কে প্রজেক্টরে। আগামীতে হয়তো আমরা ৮কে কিংবা আরো আধুনিক স্তরেও প্রবেশ করবো।
৩৫ মিলিমিটার ক্যামেরায় সিনেমা বানানোর সময় একএকটা এনজি শটে কতো টাকা নষ্ট হতো সেটা সংশ্লিষ্টদের জানা। এখন তো এনজি শট মানেই আবার করা। খরচ কি আগের সামান্য অংশও হয়?
আমাদের প্রতিষ্ঠান নাটক প্রযোজনা করে। সিনেমা এখনও আমরা বানাইনি। কিন্তু সিনেমার কষ্টিং জানি অবশ্যই। নাটকের ক্ষেত্রে নির্মাণ ব্যয় মূলত বাড়ে তারকা শিল্পী নিলে। পাশাপাশি লোকেশন যদি বিদেশে হয়, তাহলেও সামান্য বাড়ে, যদিও বিদেশে শ্যুটিং করতে গেলে সব প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান কিংবা নির্মাতাই একাধিক কাজ করেন এক ট্যুরে। আজকাল অনেক নাটকেও বড় ধরনের এরেঞ্জমেন্ট থাকে। তারপরও সব মিলিয়ে খরচের অংকটা কিন্তু আকাশ ছোঁয়া হয়না। কারণ, নাটক নির্মাণের পর বিনিয়োগকৃত টাকা উঠে আসার ব্যাপারটা সবসময় প্রযোজক এবং সৎ নির্মাতাদের মনে থাকে। একারণেই নাটক প্রযোজনা করে কোনো প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হয়েছে এমন ঘটনা ঘটেনা সচরাচর। আর এখন তো নাটকগুলো টিভি চ্যানেলের পাশাপাশি ইউটিউব চ্যানেল এমনকি ওটিটি প্ল্যাটফর্মেও চলে। মানে, নাটকে টাকা বিনিয়োগ মোটামুটি ঝুঁকিমুক্ত। চলচ্চিত্রেও এমনটা হতে হবে। প্রযোজক পেলেই (গুটিকতক পরিচালক) নিজের বেকারত্ব কালিন বকেয়া খরচাদি যোগ করে হুটহাট এক-দেড় কোটি কিংবা ৫০-৮০ লাখ বাজেট হাঁকালে অনেক প্রযোজকই পিছিয়ে যাবেন। আর আমরা যারা ইন্ডাষ্ট্রির খবর রাখি, নির্মাণ খরচ জানি, আমরা তো ওধরনের নির্মাতাদের হাসিমুখে এড়িয়ে যাবো।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে মাত্র দুটো সিনেমা মুক্তির পর সম্ভাবনার যে বাতাস বইতে শুরু করেছে সেটা ধরে রাখতে হলে বছরে অন্তত এক-দেড় ডজন ব্যবসা সফল সিনেমা আসতেই হবে। আশা করি এটা সম্ভব হবে। সিনেমায় নতুন-নতুন প্রযোজকরা আসবেন, নতুন-নতুন সিনেমা বানাবেন, এটা সবারই প্রত্যাশা।
শেষ করছি একটা বিনীত অনুরোধ রেখে। চলচ্চিত্রের সুদিনের বাতাস যখন বইতে শুরু করেছে তখন সব নির্মাতা অনুগ্রহ করে নির্মীয়মান সিনেমাগুলোয় ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক এবং গানের ব্যাপারে একটু যত্নশীল হবেন। কারণ, প্রত্যেক সিনেমার গুরুত্বপূর্ন অংশ ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক এবং গান। সাম্প্রতিক সময়ে কিংবা অতীতে এটা বহুবার প্রমাণিত হয়েছে।
সূত্রঃ লেখক, সাংবাদিক, কলামিষ্ট, গীতিকার, সুরকার সালাহ্ উদ্দিন শোয়েব চৌধুরী’র ফেসবুক স্টেটাস থেকে সংগৃহীত।

দয়া করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
March 2024
S M T W T F S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
2526272829